কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারগুলো। রবিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার ও বিভাগীয় বা ইন্সটিটিউটের সেমিনার লাইব্রেরিগুলো খুলে দেওয়া হয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রণীত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর-এসওপি অনুসরণ করে গ্রন্থাগার ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনীহা দেখা গেছে। বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কর্তৃপক্ষের অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে।
জানা যায়, সকালে অন্তত এক ডোজ করোনা টিকার প্রমাণপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখা সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে প্রবেশ করতে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দায়িত্বরতরা। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই হুড়মুড় করে ভেতরে ঢুকে পড়েন। নির্ধারিত দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে স্নাতকোত্তর শেষ করা চাকরি প্রার্থী অনেক শিক্ষার্থীও এসময় ঢুকে পড়েন। পরে গ্রন্থাগারের সব আসন পূর্ণ হলে মূল ফটক আটকিয়ে দেওয়া হয়।
গ্রন্থাগারের দায়িত্বরতরা জানান, লাইন দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে তাপমাত্রা মাপার পর শিক্ষার্থীদের ভেতরে প্রবেশের কথা ছিল। কিন্তু এর কোনোটিই শিক্ষার্থীদের অসহযোগিতার কারণে করা যায়নি। এর কিছুক্ষণ পর গ্রন্থাগার পরিদর্শনে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী, প্রধান গ্রন্থাগারিক নাসিরউদ্দিন মুন্সি ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামূল হক ভূঁইয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা।
তারা লাইব্রেরিতে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সাবেক শিক্ষার্থীদের বের হয়ে যেতে অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহা এক শিক্ষার্থীকে চড় মারতে উদ্যত হলে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ ভিডিও ধারণ করতে গেলে ক্যাম্পাসে কর্মরত দুই সাংবাদিককে হেনস্তা করেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরসহ উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর লিটন কুমার সাহা বলেন, লাইব্রেরিতে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের প্রবেশের অনুমতি ছিল। কিন্তু সাবেক অনেক শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করেছে। এছাড়াও লাইব্রেরিতে শুধু সেখানকার বই পড়তে হয়, তবে অনেকেই বিসিএসের বই নিয়ে ঢুকে গেছে। বিষয়টি আমরা তাদের বুঝিয়েছি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে পড়ার আগ্রহ আছে, এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি যিনি মানছেন না, এটা তার জন্যও বিপদের। আমরা উভয়পক্ষেই কথা বলেছি। এরপর স্বাভাবিকভাবেই লাইব্রেরি চলছে। এসওপি মানার বিষয়ে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের দিক থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছি। তবে কিছু ক্ষেত্রে উন্নাসিকতাও পেয়েছি, সেক্ষেত্রে তাদের থেকে সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা আশা করবো, শিক্ষার্থীরা আমাদের অব্যাহত ভাবে সহযোগিতা করবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও সেমিনার গ্রন্থাগারগুলো সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর
