শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসি আব্দুল লতিফ ও রেজিস্টার সোহরাব হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ রেখে শুক্রবার সকাল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে।
বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সিন্ডিকেট সভায় সাময়িক বরখাস্ত করার পর ভিসি ও রেজিস্টারের অনুরোধে আমরণ অনশন প্রত্যাহার করে নিলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদ ও ওই শিক্ষিকার স্থায়ী বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে নতুন করে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। দিনভর অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বরখাস্ত ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে নানা স্লোগান দেয়। এছাড়াও রাতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষিার্থীরা শিক্ষিকা ফারহানার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন ও আবু জাফর বলেন, শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের চুল কেটে দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত। তাই প্রশাসনিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটাকে আমরা ষড়যন্ত্র মনে করছি। আমাদের দাবি পূরণ হলেই আমরা ক্লাস ও পরীক্ষায় ফিরে যাব। আর আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান ধর্মঘট চলবে।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা ফারহাসা ইয়াসমিন বাতেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না। সিন্ডিকেট যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমি মেনে নিয়েছি। তবে কাঁচি হাতে নিয়ে ঘোরার ভিডিও দেখানো হলেও চুল কাটার ভিডিও দেখানো হচ্ছে না। এ থেকেই বোঝা যায় এটা একটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার পরীক্ষার হলের দরজায় দাঁড়িয়ে একে একে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেন ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সব পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বকাঝকা করায় অপমানে নাজমুল হাসান তুহিন নামের এক শিক্ষার্থী অতিমাত্রার ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিকসহ সকল ভবনে তালা ঝুলিয়ে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে সিন্ডিকেট সভায় ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকান্ড বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্থগিত করা হয়েছে সব পরীক্ষাও।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল