২ জুন, ২০২৩ ২১:০৬

গণরুম বিলুপ্তিসহ ৩ দাবিতে আমরণ অনশনে জাবি শিক্ষার্থী

জাবি প্রতিনিধি

গণরুম বিলুপ্তিসহ ৩ দাবিতে আমরণ অনশনে জাবি শিক্ষার্থী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মোশারফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয় গণরুম বিলুপ্তিসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। তার অন্য দাবিগুলো হল- মেয়াদোত্তীর্ণ সকল ছাত্রদের অবিলম্বে হল ত্যাগ, গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন নিশ্চিত করা।

বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এ অনশন শুরু করেন প্রত্যয়। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে 'দৃশ্যমান' কোন আশ্বাস না পাওয়ায় আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

প্রত্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। 

দাবি প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'গত দেড় বছর ধরে প্রচলিত প্রশাসনিক সকল নিয়ম মেনে গণরুম বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে আসছেন তিনি। এতে প্রশাসন কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছেন।'

প্রত্যয় আরো বলেন, 'আমি শুধু নিজের আবাসন নয়, হলের সকল বৈধ শিক্ষার্থীর আসন নিশ্চিত চাই। দাবি বাস্তবায়নে হল প্রশাসন গতানুগতিক আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের কোন সুস্পষ্ট ওয়ার্কপ্ল্যান নাই। আমি ১ মাস পরে পুনরায় অনশনে বসতে পারবো না। প্রশাসন এখন দৃশ্যমান কিছু করুক। দুইদিন পার হয়ে গেলেও তারা একজন অছাত্রকেও হল থেকে বের করেনি। দৃশ্যমান কাজ শুরু করা ছাড়া আমি আমরণ অনশন চালিয়ে যাবো।'

এবিষয়ে জানতে চাইলে হলটির নতুন প্রাধ্যক্ষ ও দায়িত্বরত ওয়ার্ডেন সাব্বির আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'দাবি বাস্তবায়নে আমরা ১ মাস সময় চাইলে সে নাকচ করে দেয়। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন করতে সময়ের দরকার। তাকে কোনভাবেই বুঝানো সম্ভব হচ্ছে না। নতুন হলগুলো চালু হলে সকল সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।'

হল প্রাধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান বলেন, 'আমি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেয়া হলেও সে অনশন প্রত্যাহারে রাজি হচ্ছে না। যেহেতু আমি আমার দায়িত্বের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আগামী রবিবারে নতুন প্রভোস্ট দায়িত্ব বুঝে নেবেন। কাজে,  আমি বিষয়টি তার দায়িত্বে দিয়ে দিয়েছি। আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথার্থ ব্যবস্থা নেবে।'

প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেছেন, 'আমি তার দাবিগুলোর সাথে সম্পূর্ণ একমত। একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক হলে এমন সমস্যা কোনভাবেই কাম্য নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রভোস্টসহ কর্তৃপক্ষের সকলের সাথে আলোচনা করেছি। আমরা কখনোই চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম থাকুক। আশা করছি আমরা খুব শীঘ্রই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো।'

এদিকে অনশনের ফলে প্রত্যয়ের তীব্র শারীরিক অবনতি হয়েছে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সানি।

ডা. সানি বলেন, 'জরুরি ভিত্তিতে অনশনকারীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। তার শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা একরকম শূন্য। যেকোনো মুহূর্তে বিপদ হতে পারে।'


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর