সাভার পরিবহন বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বান্ধবীর বড় বোনের কারের সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে ইতিহাস পরিবহনের ১০টি বাস আটক করে রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের নিয়মিত শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টার মধ্যে জাবির প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে আরিচাগামী রুটে বাসগুলো আটক করা হয়। ওইদিন বিকেল ৪ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাসগুলো আটক করা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওইদিন সকাল ১০ টার দিকে সাভারের রেড়িও কলোনি এলাকায় মহাসড়কের মাঝখানের লেন থেকে একটি যাত্রীবাহী মোটর সাইকেল ইউটার্ন নেওয়ার সময় পিছনে থাকা ইতিহাস পরিবহনের একটি বাস ব্রেক করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়। তখন ইতিহাস পরিবহনের বাসটির পিছনে থাকা সাভার পরিবহনের বাসটিও ব্রেক করলে জাবি ছাত্রীর বড় বোনের চলন্ত কারটি সরাসরি সাভার পরিবহন বাসের পিছনে ধাক্কা লাগে। এতে কারটির সামনের অধিকাংশ অংশ ভেঙ্গে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাটি ওই ছাত্রী তার বিভাগের ছেলে বন্ধুদের জানালে তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে ইতিহাস পরিবহনের বাস আটক শুরু করেন। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রবিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সামনে থাকা ইতিহাস পরিবহনের বাসটি রাস্তায় তাৎক্ষণিক ব্রেক না করলে এ দুর্ঘটনা ঘটতো না। ফলে কারটি ক্ষতিগ্রস্তের জন্য ইতিহাস পরিবহনের বাস দায়ী। যার কারণে, তারা ইতিহাস পরিবহনের বাস আটক করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রবিন বলেন, ইতিহাস পরিবহনের বাসটি ব্রেক না করলে সাভার পরিবহনের বাসও ব্রেক করতো না। তখনতো পিছনে থাকা কারটি আর সাভার পরিবহনের বাসের সাথে ধাক্কা লাগতো না। এতে সম্পূর্ণ দোষ ইতিহাস পরিবহনের বাসটির। তাই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কারটি মেরামতের জন্য যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দরকার তা আদায়ের দাবিতে ইতিহাস পরিবহনের বাস আটক করেছি। তারা ক্ষতিপূরণ দিলে বাস ছেড়ে দেওয়া হবে।
সাভার টু জিরানি রুটের ইতিহাস পরিবহনের চেকার মো. জসীম হাওলাদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাভার পরিবহনের বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে কারটি ভেঙ্গেছে। কিন্তু আমাদের বাস আটক করে তারা ১ লাখ ৩১ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাচ্ছে। এতে ইতিহাস পরিবহনের দোষ কোথায়? ইতিহাস পরিবহনের বাস ব্রেক না করলে-তো মোটরসাইকেলের যাত্রী মারা যেতো। তারপরও এখন আমরা উভয় পক্ষ আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছি। ক্ষতিপূরণ দিয়ে হলেও বাস নিতে হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (নিরাপত্ত-২) মো. জেফরুল হাসান চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শুনেছি ক্ষতিগ্রস্ত কারটি মেরামত করে দেওয়ার জন্য ইতিহাস পরিবহনের মালিকপক্ষ রাজি হয়েছে। কারটি এখন গ্যারেজে আছে। ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিলে শিক্ষার্থীরা বাস ছেড়ে দিবে বললো। এ ঘটনায় আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল