চট্টগ্রাম নগরে ওয়াসার চলমান তিনটি প্রকল্পের খুড়াখুঁড়িতে চলছে অন্তহীন ভোগান্তি। খুড়াখুঁড়ির এ ক্ষত শুকানোর আগেই ফের সড়ক কাটবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) বরাবরে লিখিত অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিটিসিএল। আগামী ১ অক্টোবর থেকে সংস্থাটি সড়ক কাটাকাটির কাজ শুরু করবে। ফলে যাতায়াতে নগরবাসীর পিছু ছাড়ছে অন্তহীন ভোগান্তি-দুর্ভোগ।
বিটিসিএল সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারন্যট সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভূ-গর্ভস্থ অফটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করবে। এ লক্ষ্যে ‘ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ’ শীর্ষক ২ হাজার ৫৭৩ কোটি ৩৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এ ব্যাপারে মুরাদপুর বিটিসিএল টেলিফোন একচেঞ্জ এলাকার সড়কের পাশ দিয়ে ‘হরিজনাল ডাইরেকশনাল ড্রিলিং’ এবং ‘ওপেন কাট’ পদ্ধতিতে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপনা করা হবে। কাজটি আগামী ১ অক্টোবর থেকে ৩০ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত চলবে। এই সময়ে কাটাকাটি চলবে নগরের মোহাম্মদপুর, সুগন্ধা, মির্জাপুল, পাচলাইশ, ওআর নিজাম রোড, আবদুল লতিফ, আবদুল্লাহ খান, হামদু মিয়া, চট্টগ্রাম-হাটহাজারী রোড, আবদুল হামিদ, সিডিএ অ্যাভিনিউ, চাদ মিয়া, ওমর আলী মাতব্বর, খতীবের হাট, আবদুল করিম, ফরিদের পাড়া, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে, বারইপাড়া, খাজা রোড, নাজির পাড়া, বায়েজিদ বোস্তামি, হাজী নুর আহম্মেদ, মসজিদ লেন, হিলভিউ, কেবি ফজলুল কাদের এবং ওআর নিজাম সড়ক এলাকার পাশের রোড। মোট ১১৭ দশমিক ৫০৪ ঘনমিটারের ৬৮টি হ্যান্ড হোল্ড এবং এইচডিডি পরিমাণ ১৬ হাজার ৮২১ মিটার।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা বলেন, ‘সেবা সংস্থাগুলো জনস্বার্থেই সড়ক কাটে। এখন বিটিসিএল যদি তাদের প্রকল্পের জন্য সড়ক কাটতে চায়, তাহলে তো অনুমোদন দিতে হয়। কারণ তাদের কাজও তো জনগণের জন্য।’
চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে চলছে ১৪ কোটি লিটার উৎপাদন ক্ষমতার কর্ণফুলী পানি শোধনগার-২, ৯ কোটি লিটার উৎপাদন ক্ষমতার মদুনাঘাট পানি সরবরাহ প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম নগরে পানি সরবরাহ উন্নীতকরণ ও স্যানিটেশন প্রকল্প। এ তিন প্রকল্পের আওতায় নগরের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ২০টি সড়ক কাটা হয়েছে। এসব সড়কে ৪৮ ইঞ্চির ট্রান্সমিশন পাইপলাইন স্থাপন করা হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত পাইপলাইন বসানোর কাজ করছে ওয়াসা। ফলে গত তিনবছর ধরে বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত সড়কের এক পাশ বন্ধ। নগরের প্রাণ কেন্দ্র নন্দন কানন রোড, ডিসি হিল হয়ে নিউমার্কেট সড়কটি ওয়াসার কোপে ক্ষতবিক্ষত। মুরাদপুর থেকে পাঁচলাইশ মোড় হয়ে অলি খাঁ মসজিদ পর্যন্ত সড়কে ওয়াসা স্থাপন করছে ৪৮ ইঞ্চির ট্রান্সমিশন পাইপলাইন। চকবাজার থেকে গনি বেকারি-জামালখান মোড় পর্যন্ত সড়কটিও ওয়াসার দখলে। সার্সন রোড থেকে চট্টশ্বরি হয়ে গোলজার মোড় পর্যন্ত চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। সিনেমা প্যালেস থেকে রাইফেল ক্লাব মোড় পর্যন্ত সড়কটিও বন্ধ। এভাবে চট্টগ্রাম ওয়াসা পানি সরবরাহের পাইপলাইন স্থাপনের জন্য নগরের অধিকাংশ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে শুরু করেছে খুড়াখুঁড়ি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার