১২ মে, ২০২১ ২০:৪৩

খুনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সব কিছুই তদারকি করেন বাবুল আকতার

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

খুনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সব কিছুই তদারকি করেন বাবুল আকতার

মাহমুদা খানম মিতু - বাবুল আকতার

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের বলি হয়েছেন স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। খুনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সব কিছুই তদারকি করেছেন বাবুল আকতার নিজেই। এমনকী কিলিং মিশন শেষ হওয়াার পর অংশগ্রহণকারীদের নগদ তিন লাখ টাকাও দেন। মিতু হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা এবং পিআইবি’র দেয়া অপর মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজার থাকাকালীন সময়ে এনজিও কর্মকর্তা ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রী অমর সিংয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে বাবুল আকতারের। তাদের পরকীয়ার বিষয় জেনে যাওয়ার পর মিতু সাথে পারিবারিক কহল শুরু হয়। এসময় বাবুল আকতার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। আবার গায়ত্রী মিতুকে খুনের হুমকিও দেয়। বাবুল পথের কাটা দূর করতে মিতুকে খুনের পরিকল্পনা করে। নিজের লোকজন দিয়ে মিতুকে খুন করে।’

মিতু হত্যা মামলায় পাঁচলাইশ থানায় দায়ের হওয়া মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাবুল আকতার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কক্সবাজার থাকাকালে ইউএনএইচসিআরের ফিল্ড অফিসার গায়ত্রী অমর সিংয়ের সাথে পরিচয় হয়। তারা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালে সুদানে মিশনে যাওয়ার সময় বাবুল আকতার মোবাইল বাসায় রেখে যান। এসময় গায়ত্রী বিভিন্ন সময় মোবাইলে ২৯টি ম্যাসেজ পাঠান। হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে বাবুল আকতার চীনে প্রশিক্ষণের জন্য যান। এসময় গায়ত্রীর উপহার দেয়া ‘তালিবান’ এবং ‘বেস্ট কেপ্ট সিক্রেট’ বই দুটি পান। এতে তালিবান বইয়ের তৃতীয় পৃষ্টায় গায়ত্রী লেখেন Coxsbazar, Bangladesh. Hope the memory of my offering you this personal gift, shall etarnalize our wonderful bound, love you, Gaitree. একই বইয়ে ২৭৬নং পৃষ্টায় বাবুল আকতার লিখেন, First meet: 11 Sept, 2013, First PR in Cox. 07 Oct 2013. G Birth Day, 10 October, First (----) 05 Oct 2013; First beach walk: 8th Oct, 2013, 11 Oct 2013, Marmaid with family, 12 Oct 013, Temple Ramu Prayed Together, 13 Oct 2013; Ramu Rubber Garden Chakaria night beach walk. বাবুল ও গায়ত্রীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় মিতুকে।

মিতু হত্যকাণ্ডে বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠেছে পিবিআই’র দেয়া আরেক মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও বাবুল আকতারের ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হক এবং গাজি আল মামুনের আদালতে দেয়া সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দিতে। 

মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফিউদ্দিনের আদালতে জবানবন্দি দেন। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুার চাকমা বলেন, ‘স্ত্রী হত্যার তিন দিন পর বাবুল আকতার তার ব্যবসায়িক অংশীদার সাইফুল হককে লাভের অংশ থেকে তিন লাখ টাকা দেয়ার জন্য বলেন। সাইফুল বিকাশের মাধ্যমে ওই টাকা গাজি আল মামুনকে পাঠান। পরে মামুন ওই টাকা মুছা, ওয়াসিমসহ অন্যান্য আসামিদের ভাগ করে দেন।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের এক মাসের মধ্যেই এ খুনের সরাসরি অংশগ্রহণকারী এবং অস্ত্র সরবরাহকারীসহ সাত জনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী।

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর