চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, মানুষ মাত্রই ভুল। মেয়রের দায়িত্ব নিয়ে সব জানি, এটি আমি কখনো মনে করি না। কাজেই কর্পোরেশন পরিচালনায় যদি কোন ভুলত্রুটি হয়, আপনারা তা আমাকে ধরিয়ে দিবেন। আমি সংশোধন করে নেব। এ ব্যাপারে নগরীর সর্বস্তরের জনসাধারণ, সুধীজন, সংবাদ মাধ্যমের সহায়তা কামনা করি।
বৃহস্পতিবার সকালে আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনের কেবি আবদুস ছাত্তার মিলনায়তনে মেয়রের দায়িত্বগ্রহণ পরবর্তী ১০০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রামের অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় সভায় একথা বলেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক। উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দীন ও আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর মো. শহীদুল আলম, মো. এসরারুল হক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চসিক সচিব খালেদ মাহামুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির প্রমুখ। শুরুতে নগরজুড়ে চসিক মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের ১০০ দিনের ক্রাশ প্রোগ্রামের সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
চসিক মেয়র বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের ১০০ দিনে ক্রাশ প্রোগ্রামে ওয়ার্ডভিত্তিক প্যাচওয়ার্ক আমরা শতভাগ সফল হয়েছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওয়াসার সংযোগ লাইনের জন্য মেরামত করা রাস্তা আবার কাটা হচ্ছে। যেমন সদরঘাট স্ট্যান্ড রোড, মেরামতের পর লাইনের লিকেজের কারণে এই সড়ক ওয়াসা আবারো কাটলো, এতে বিটুমিন উঠে গিয়ে সড়ক নষ্ট হয়েছে। কিন্তু দুর্নাম হয় চসিকের। এলইডি লাইট স্থাপনের ক্ষেত্রেও শতভাগ সফল। ৩০টি রাস্তা ৭৬ কিলোমিটার অংশে ২৯৬০ পোলের সাহায্যে ৫০১১টি এলইডি লাইট স্থাপন করা হয়েছে। নগরীর সৌন্দর্য্যবর্ধনের ক্ষেত্রে রাস্তায় মিডিয়ান ও ফুটপাত রংকরণের ৭০ ভাগ সম্পন্ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজ করছে সিডিএ। এক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব নগরীর ৩ ফিটের নালাগুলো পরিস্কার করা। এছাড়া মেগা প্রকল্পের কাজের কারণে সমস্ত বড় নালা, খালে বাঁধ রয়েছে। ফলে পানি বদ্ধ অবস্থায় আছে। বদ্ধ পানিতে মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়, এতে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়, আবার মশার উৎপাতও কমছেনা। তারপরও মশার উৎপাত বন্ধে ওষুধের গুণাগুণ যাচাই ও কার্যকারিতা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের নেতৃত্বে ৩ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা গবেষণা করে প্রতিবেদন ও পরামর্শ দিলে শিঘ্রই এই নিয়ে কাজ শুরু করবো।
মেয়র বলেন, আমি ১০০ দিনের কার্যক্রমে কাউকে নগরীর কোনো ফুটপাত বা জায়গা ইজারা দেয় নাই। কাউকে কোনো বিলবোর্ডও লাগানোর অনুমতি দেয়া হয়নি। যা দেয়া হয়েছে তা পূর্বে। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলে আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেমন কাজীর দেউড়িতে ফুটপাত দখলের বিষয়ে জেনে পরদিন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভেঙে দিয়েছি। কাজেই ভুল বুঝার কোন অবকাশ নাই। আগামীতেও কোন অন্যায়কারী দখলবাজ কাছে প্রশ্রয় পাবে না।
মেয়র বলেন, রাতে ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের উদ্যোগ ভাল ছিল। সাবেক মেয়র এই কার্যক্রম শুরু করেছিলেন। তবে এখন যে তা বন্ধ এটা নিয়ে কোন অফিস আদেশ বা মৌখিক নির্দেশ দেয়া হয়নি। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় আপাতত রাতে আবর্জনা পরিস্কার করা হচ্ছে না। পরিস্থিতি উন্নতি হলে তা আবার শুরু হবে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন