২৬ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:৪২
প্রতারণার নতুন স্টাইল

চাঁদাবাজি-মাদক ব্যবসা সবই নিয়ন্ত্রণ করেন তারা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

চাঁদাবাজি-মাদক ব্যবসা সবই নিয়ন্ত্রণ করেন তারা

গ্রেফতার রুবেল ও রাশেদ।

কখনো পুলিশের বড় কর্তা। কখনো র‌্যাব কর্মকর্তা। এসব পরিচয় দিয়েই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন কিছু প্রতারক চক্র। আইন প্রয়োগকারীর সংস্থার সদস্য পরিচয়ে পাহাড় ও জমি দখল, মাদক ব্যবসাসহ অপরাধের শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছে বিভিন্ন এলাকায়। অপরাধ জগতে বেপরোয়া হয়ে ওঠা ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা’র কথিত সদস্যদের অবশেষে নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রামের প্রশাসন।

র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারীর সংস্থার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গার প্রতারণা করছে এমন তথ্য আসার পর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। র‌্যাব পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরো কয়েকজন নজরদারিতে রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’

সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে চাঁদাবাজি রোধ করতে সিএমপি বদ্ধপরিকর। তাদের বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ পরিচয়ে চাঁদা নেওয়ার সুযোগ নেই। নগরবাসীকে অনুরোধ করবো পুলিশ পরিচয়ে কেউ চাঁদা চাইলে, তা সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করতে।’

জানা যায়, সিএমপি ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন জায়গায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে বেশ কিছু অপরাধী চক্র। তারা বিভিন্ন সংস্থার পরিচয়ে চাঁদাবাজি, অপরাধ আখড়া নিয়ন্ত্রণসহ নানান অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া সরকারি পাহাড় দখল, খাস জমি দখলও মেতে উঠেছে। এমনকি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে প্রতারণার বিষয়টি নজরে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রামের প্রশাসন। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযানও শুরু করেছে।

গত শুক্রবার নগরীর রৌফাবাদ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় মো, রুবেল নামে এক যুবককে। তার প্রতারণার বিষয়ে বায়েজিদ থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, রুবেল বিভিন্ন জনের কাছে নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিতো। এ পরিচয়ে চাঁদাবাজি, সরকারি পাহাড় দখল, জমি দখল এবং জুয়ার আসর বসাতো। তার অপকর্মের খবর পেয়ে শুক্রবার ভোরে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

এর আগে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় গত ২৩ নভেম্বর সীতাকুণ্ড থেকে মো. রাশেদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৭। ২০ নভেম্বর মিরসরাইয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বেগম পারুল আকতার নামে এক নারীর কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ১৮ নভেম্বর নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় র‌্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রতারণার সময় মো. রিহাদ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৭।

১৮ মার্চ পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক নারীর কাছ থেকে নগদ অর্থ এবং স্বর্ণালংকার লুঠের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করে সিএমপি’র সদরঘাট থানা পুলিশ। ১৫ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মোজাম্মেল হক নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। নগরীর পাহাড়তলী থানার এসআই পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ৭ ডিসেম্বর জসিম উদ্দিন নামে একজনকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর