থামছে না চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালি কন্টেইনারের ভেতর লুকিয়ে বিদেশ যাত্রা। গত ১২ বছরে বন্দর দিয়ে খালি কন্টেইনারে করে কমপক্ষে সাতটি বিদেশ যাত্রার ঘটনা ঘটেছে। বিদেশ পাড়ি দেয়ার চেষ্টাকালে একজন কন্টেইনারেই মারা গেছেন। বাকিরা বিদেশি বন্দরে কিংবা যাওয়ার পথে আটক আটক হয়েছেন। অভিন্ন ঘটনা বার বার হওয়ার কারণে চট্টগ্রামের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যেমন প্রশ্ন ওঠছে, আবার সুনামও হচ্ছে ক্ষুণ্ন।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘বন্দর থেকে কন্টেইনারে প্রবেশের সুযোগ নেই। হয়তো বাইরে থেকে ওই ব্যক্তি কন্টেইনারে প্রবেশ করেছে। তারপরও কিভাবে কন্টেইনারে প্রবেশ করেছে তা তদন্ত করা হবে। এছাড়া এ ধরনের ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, খালি কন্টেইনার জাহাজে তোলায় আগে তিন দফা যাচাই বাছাই করা হয়। প্রথম দফায় জাহাজে নেয়ার আগে ডিপো কর্তৃপক্ষ কন্টেইনার খুলে যাছাই-বাছাই করেন। অতঃপর বন্দরে নিয়ে যাওয়ার পর কন্টেইনারের দরজাগুলো তা দ্বিতীয় দফা পরীক্ষা করেন বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা। এরপর জাহাজে তোলার আগে খালি কন্টেইনার চূড়ান্ত পরীক্ষা করেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যাওয়া খালি কন্টেইনার থেকে গত ১৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষ ফাহিম নামে এক কিশোরকে আটক করে।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই কন্টেইনারে করে যুক্তরাজ্য যাওয়ার চেষ্টাকালে বাবুল ত্রিপুরা নামে একজনকে আটক করে বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা। ২০১৬ সালের ১৯ অক্টোবর ভারতের বিশাখাপত্তনম বন্দর খালি কন্টেইনার থেকে রোহান হোসেন নামে এক জনকে উদ্ধার করা হয়। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরগামী জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয় শোয়েব রিপন নামে এক যুবককে। ২০১১ সালের ১ এপ্রিল সিঙ্গাপুর বন্দরগামী জাহাজের কন্টেইনারে ওঠেন দ্বীন ইসলাম এবং আল আমিন নামে দুই জন। পরে দ্বীন ইসলামকে জীবিত এবং আল আমিনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একই বছরেরর ২৬ এপ্রিল শ্রীলঙ্কাগামী জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয় আকতার আলী নামে এক ব্যক্তিকে। ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর মালেশিয়াগামী জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয় মোহাম্মদ রিপন নামে এক যুবককে।
শিপিং এজেন্টস এসোশিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্দ আরিফ বলেন, ‘খালি কন্টেইনার জাহাজে তোলার আগে একাধিক বার নিরাপত্তা তল্লাশি করা হয়। যারা এ দায়িত্ব পালন করেন, তাদের তল্লাশিতে গাফিলতি আছে। তাই তারা দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। বার বার একই ধরনের ঘটনা সংগঠিত হওয়ার কারণে বিদেশের মাটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত