চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির গঠিত তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি আইনজীবী সমিতির গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন ৫ সদস্যের সবাই।
বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তারও অব্যাহতি চেয়েছেন। পাশাপাশি জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের কাছে আলিফ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য সুপারিশ করেছেন।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন বলেন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডটি যেহেতু চাঞ্চল্যকর একটি মামলা। যার কারণে আইনজীবী সমিতির গঠিত তদন্ত কমিটি মনে করছে, সাধারণ কেউ এটি তদন্ত করার চেয়ে জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক তদন্ত করলে, তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে। যার কারণে তদন্ত কমিটির ৫ জনই পদত্যাগ করে এই সুপারিশ করেছে। যেহেতু জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক দিয়ে তদন্ত করতে গেলে সেটা সরকার থেকে করতে হবে। আমরা সমিতির বৈঠক করে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তার বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনার পর সমিতির পক্ষ থেকে ১০ নভেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১৫ নভেম্বর রিপোর্ট দিতে বলা হয়। এর মধ্যে সদস্য সচিবসহ চারজন পদত্যাগ করেছেন। এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ৭টি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী জড়িত থাকতে পারে। পুলিশের মাইক দিয়ে প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায় চিন্ময় বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলার নকল নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন অবস্থায় এ ঘটনা সাধারণ কেউ তদন্ত করলে হবে বলে মনে করছি না। একজন জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক দিয়ে আলোচিত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। এ কারণে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার আমি নিজেই এ তদন্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছি।
গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
এ ছাড়াও পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য নামে তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই