ভাবীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক বাঁধামুক্ত এবং নির্বিঘ্ন করতে মাত্র এক লাখ টাকার বিনিময়ে ৪ ভাড়াটে খুনি দিয়ে আপন বড় ভাই খালেদ মোহাম্মদ টিপুুুকে খুন করিয়েছেন বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডের মাছ ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের চরফরিদ গ্রামের নুর উদ্দিন জাহেদ মুনসুর। গত ২৫ অক্টোবর রাতে বরিশাল নগরীর কাঠপট্টি রোডের ভাড়া বাসায় খালেদ মোহাম্মদ টিপুুুকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
টিপু হত্যা মামলার বাদী ছোট ভাই নূর উদ্দিন জাহেদ মুনসুরকে ঘটনার ১৬ দিন পর পুলিশ গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী গত বুধবার গ্রেফতার করা হয় চার ভাড়াটে খুনিকে। তারা হলেন- নগরীর পলাশপুর ৮ নম্বর গলির শুক্কুর মোল্লা ও পলাশ দাস, বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাইর মো. হাসান এবং নগরীর কাশীপুরের সারসি গ্রামের আলতাফ হাওলাদারকে। এরা সকলেই খালেদ মোহাম্মদ টিপুুুকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার দের আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোতয়ালী মডেল থানায় এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মেটোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতয়ালী) আজাদ রহমান জানান, নিহত টিপু দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। এই সুযোগে বড় ভাইয়ের স্ত্রী ২ সন্তানের জননী শারমিন আক্তার টুনটুর সাথে নুর উদ্দিন জাহেদ মুনসুরের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বড় ভাই টিপু এক বছর আগে দেশে আসার পর বেকায়দায় পড়ে জাহেদ মনসুর ও টুনটু। পরে জাহেদ মনসুর কৌশলে বড় ভাই টিপুকে বরিশাল এনে নগরীর পোর্ট রোডে জনৈক ওসমান মিয়ার মাছের আড়তে চাকরি দেন। তারা দুইজন নগরীর কাঠপট্টি রোডে বিএনপি নেতা সৈয়দ জামাল হোসেন নোমানের বাসার ৫ম তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। টিপু বরিশালে থাকাকালীন জাহেদ চট্টগ্রামে গিয়ে ভাবী টুনটুর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। টুনটু এক পর্যায়ে জাহেদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যে, সে একসঙ্গে স্বামী ও দেবরের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবে না। তাই সে স্বামীকে হত্যা করার জন্য দেবরকে পরমর্শ দেয়। পথের কাঁটা সরিয়ে দিতে জাহেদ মুনসুর স্থানীয় ৪ ভাড়াটে খুনির সঙ্গে এক লাখ টাকায় চুক্তি করে। গত ২৫ অক্টোবর রাতে ভাড়া বাসায় ঢুকে ৪ ভাড়াটে খুনি টিপুকে চেয়ারের সাথে হাত-পা বেঁধে, মুখে কাপড় ঢুকিয়ে, গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওইদিন জাহেদ মুনসুর বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) আজাদ রহমান জানান, এই হত্যাকাণ্ডটির কোন ক্লু ছিল না। হত্যাকাণ্ডের ১৬ দিন পর মামলার বাদীকে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে তার ভাবীর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক বাঁধাহীন করতে ভাইকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় বড় ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন আক্তার টুনটুকেও আসামি করা হচ্ছে। গ্রেফতারের ভয়ে সে আত্মগোপন করেছে বলে জানিয়েছেন এসি আজাদ রহমান।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ