কোরবানের ঈদে যাত্রী সুবিধা ও সরকারের রাজস্ব আয়ের বিষয়গুলো বিবেচনা করেও শেষ পর্যন্ত ‘ইলেকট্রনিক ফিট’ দেয়া গেল না সেই কোচটির। দীর্ঘ দুই মাস ধরেই ঢাকার ইয়ার্ডে পড়ে থাকা ইন্দোনেশিয়ান কোচটি (নং-ডব্লিউজেসিসি ১৩০১) বিভিন্ন ট্রেনে চলাচলের জন্য ফিট না দেয়ায় অর্ধকোটি টাকার উপরে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তবে পূর্বাঞ্চল রেলের প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় দীর্ঘ দুই মাস ধরেই এ কোচটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। রেলপথ মন্ত্রীসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের বির্তকিত করতে এসব দায়িত্বে অবহেলা করেছে বলেও সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ৩০ আগষ্ট চীফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট দপ্তর থেকে প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশল (পূর্ব) বরাবরে দ্রুত সমাধানের জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠিও দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের কোটি টাকার টেন্ডার জালিয়াতির কারণে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। একই সাথে দুদকও তদন্ত করছে দুদক সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে বিভাগীয় বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা (ঢাকা) মো. আরিফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডারের স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়ে প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশল আনোয়ান হোসেনসহ দপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারি এ বিভাগকে বির্তকিত করেছে। এসব ঘটনায় ইতিমধ্যে রেলের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া সরবরাহ, নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, উন্নয়ন, সেবা, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণসহ নানাবিধ বিষয়ে দুদকও তদন্ত করছে। এসব বিষয়ে দুদক প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী বরাবরে একটি চিঠিও দিয়েছে গত ৫ জুলাইয়ে। রেল অঙ্গনে প্রচলন আছেন রেলপথ মন্ত্রীর আশ-পাশের লোকজন, ও ডিজিসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চেয়ারে বসেছেন। তাকে কেউ সরাতে পারবেন না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট আত্বীয়ের বিয়েতেও বিভিন্ন গিপ্টও দেয়া হয় নিয়মিত। বদলীসহ নানাবিধ আতংকে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারি প্রকাশ্যে কিছুই বলতে পারেন না অনিয়মের বিরুদ্ধে। নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়ান থেকে আমদানীকৃত সিগ্ধা কোচ (নং-ডব্লিউজেসিসি ১৩০১) দীর্ঘ দুই মাস ধরেই ঢাকা ইয়ার্ডে ইলেকট্রনিক ড্যামেজ জনিত কারণে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। যাত্রী সুবিধা ও সরকারের রাজস্ব বিবেচনায় এনে বৈদ্যুতিক বিভাগকে বারবার মৌখিক ও চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হলেও কোচটি ‘ইলেকট্রনিক ফিট’ দেয়া হয়নি। বলা হচ্ছে, ইন্দোনিশিয়ান টেকনিশিয়ান না আসা পর্যন্ত কোচটি মেরামত হবে না। সূত্রে জানা গেছে, ইন্দোনিশিয়ান টেকনিশিয়ান দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে অবস্থানরত অনেকগুলো ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ড্যামেজ কোট ফিট দিয়েছেন। বর্তমানে কোচ সংকটের কারণে ঈদুল আযহা উপলক্ষে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এতে উক্ত কোচটি চলাচল না করার কারণে দৈনিক আপ-ডাউন রাজস্ব আয় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, গড়ে গত দুই মাসে ( সর্বশেষ ৩০.০৮.১৭ পর্যন্ত) ৫৭ লাখ বিশ হাজার টাকা সরকারের রাজস্ব আয় বঞ্চিত হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার