কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় কবিরাজ মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে শিশু শেখ ফরিদকে দুষ্টমি কমানোর চিকিৎসার নামে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার দুপুরে শিশুটি মারা গেলেও রবিবার ঘটনাটি আলোচনায় আসে এবং চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরিবারের অভিযোগ, দুষ্টমির চিকিৎসার নিতে গিয়ে শিশু ফরিদ ফিরলো শান্ত হয়ে সাদা কাফনে!
অভিযুক্ত কবিরাজ মাহবুবুর রহমানের বাড়ি কুমিল্লা সদর উপজেলার কুচাইতলীতে। শিশু শেখ ফরিদ কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি সিন্দুরিয়া পাড়া গ্রামের প্রাবাসী জামাল হোসেনের ছেলে। জামালের একমাত্র সন্তান ফরিদ।
শিশুর পরিবার সূত্র জানায়, তিন বছরের ছোট্ট শিশু শেখ ফরিদ দুষ্টমি বেশি করার কারণে শুক্রবার সকালে ওই কবিরাজের কাছে নিয়ে যায় তার মা। কবিরাজের দেওয়া শর্ত মতে সন্তানের দুষ্টুমি কমাতে মা তার সন্তানকে তিন দিনের জন্য কবিরাজের কাছে রেখে আসে। রাতে ফরিদের মা ফোন দিয়ে কবিরাজের কাছে ছেলের খবর নেয়। কবিরাজ জানায় ছেলে ফরিদ ভালো আছে। চিকিৎসা চলছে, রবিবারে এসে নিয়ে যাবেন। একবারে ভদ্র ও শান্ত হয়ে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু শনিবার দুপুরে শিশু শেখ ফরিদের মৃত দেহ সাদা কাফনে মোড়ানো এম্বুলেন্সে করে তার বাড়িতে পাঠায় কবিরাজ। কবিরাজ ফোন করে জানায়, ‘জিনে মেরে ফেলেছে সকালে, গোসল জানাজা হয়ে গেছে দাফন করে দিন’। এম্বুলেন্সের সাথে কবিরাজ তার এক খাদেমকেও পাঠায়।
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পরে শিশুর মামাতো ভাই জাহিদ হোসেন এবং নিকটাত্মীয় মোবারক মিয়া পুলিশকে জানালে পুলিশ কবিরাজ মাহবুবুর রহমানের খাদেম ও এম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে আটক করে। এদিকে কবিরাজ মাহবুবুর রহমান তার আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ফরিদের গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রবিবার ভন্ড কবিরাজ মাহবুব ও তার খাদেম শাহাদাত হোসেনের নাম উল্লেখ করে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় ফরিদের মা মামলা দায়ের করেছেন। খাদেমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভন্ড কবিরাজ মাহবুবকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/০১ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব