রাজশাহীর বাগমারার বিলে ‘মাছ ধরা নিয়ে’ বিরোধের জেরে আনসার রহমান মৃধা (৫০) নামের এক মাছচাষীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে আহত হয়েছেন তার দুই ছেলেসহ তিনজন। তাদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অপরজনকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন আনসারের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৩০), আলী খাজা (২৫) ও প্রতিবেশী আবুল কালাম আজাদ (৩৫)। এদের মধ্যে আবুল কালাম আজাদের অবস্থা গুরুতর বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বাগমারা থানার ওসি নাসিম আহমেদ জানান, বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে নরদাস ইউনিয়নের হাটমাধনগর বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত আনসার রহমান ওই ইউনিয়নের কাস্টন্যাংড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মৎস্য চাষী প্রকল্পের (সমিতি) কোষাধক্ষ ছিলেন।
ওসি জানান, সকালে হাটমাধনগর বাজারে একদল লোক আনসার রহমানের উপর হামলা চালিয়ে এতোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনসার মৃধাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার সময় আহত জাহিদুল ও কালামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও আলী খাজাকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তারাই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন।
তিনি বলেন, স্থানীয় জোকা বিলে মাছ মারা নিয়ে এলাকার দু’পক্ষের মধ্যে গত কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর আগে গত সোমবার দু’পক্ষের সংঘর্ষও হয়েছিল। এর জেরেই আনসার রহমান মৃধাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
মৎস্য চাষী প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, মাদনগর বাজারে তাদের সমিতির কার্যালয় রয়েছে। ভোরে নামাজ পড়ে আনসার আলী অফিসে যায়। সোয়া ৯টার দিকে নাস্তা করার জন্য অফিস থেকে বের হয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। অফিস থেকে কিছু দূর এগুতেই একদল লোক তার উপর হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে স্থানীয় দুই গ্রামবাসী আহত হয়েছেন।
দেলোয়ার হোসেন জানান, ২০১১ সালে মৎস্যচাষী প্রকল্প লিমিটেডের নামে মৎসজীবীরা জোকা বিলটি ১০ বছরের জন্য জমির মালিকদের কাছ থেকে লিজ নেয়। এ প্রকল্পে ৫০১ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন। লিজ নেয়ার পর থেকে মৎসজীবীরা ওই বিলে মাছ চাষ করে আসছে। কিন্তু স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিলটি দখলে নেয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
গত ১২ এপ্রিল তারা ওই বিলে জোরপূর্বক মাছ ধরতে গেলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে পরদিন মৎস্যচাষী প্রকল্পের পক্ষে থেকে ১৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দেয়। এর জের ধরে গত সোমবার তারা মৎস্যজীবীদের উপর হামলা চালায়। এ সময় সংঘর্ষে ২০ মৎস্যজীবী আহত হন। ওই বিলে প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার মাছ চাষ করা হয় বলে জানান দেলোয়ার হোসেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব