গরীব-দুঃখী, অসহায়, দুস্থ ও রিকশাচালক-শ্রমজীবী মানুষদের রাতের খাবার খাওয়াচ্ছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। রাজধানীর কাকরাইলে নিজ কার্যালয়ের নীচে গত ৮ জুলাই থেকে এই খাবার বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি। এতে ব্যাপক সারা পড়ছে।
কাকরাইল ছাড়াও গুলিস্তান, মোহাম্মদপুর, তেজগাও, বংশাল, যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, খিলগাও, রামপুরা, মগবাজার, শান্তিনগর, আজিমপুর, বাবুবাজার, ওয়ারিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার গরীব-দুঃখী-অসহায় মানুষকে প্রতি রাতে এই খাবার দেওয়া হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টির দিনেও বন্ধ থাকে না, এই খাবার বিতরণ। যতই দিন যাচ্ছে, মানুষের সংখ্যা ততই বাড়ছে।
খাবারগুলো বিতরণ করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগের নেতারা। যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সংগঠনের সহ-সভাপতি মোরসালিন আহমেদ বলেন, আমাদের প্রিয় নেতা রাজধানীর গরীব-অসহায় দুঃখী মানুষের কথা বিবেচনা করে রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিদিন রাত ১১টায় আমরা খাবার বিতরণ শুরু করি-সাড়ে বারোটার দিকে শেষ হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান বলেন, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট যে শুধু যুব বন্ধু তাই নয়, তিনি গরীব-দুঃখী মানুষেরও বন্ধু। সে কারণে গরীব-অসহায়-রিকশাচালকদের জন্য বিনামূল্যে খাবার বিতরণ শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রথম যখন এই কার্যক্রম শুরু হয়, তখন মানুষের সংখ্যা কম থাকলেও এখন দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ খায়। আমরা যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতারা রাতে খাবারগুলো বিতরণ করি। যারা খেতে আসেন-তারাও সুশৃঙ্খলভাবে খাবার গ্রহণ করে চলে যান।
গত রবিবার রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাকরাইল সিনেমা হলের সামনের রাস্তা রিকশায় ভরপুর। তবে কেউই যাত্রী নিতে আসেননি। সবাই এসেছেন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিনামূল্যের খাবার খেতে।
কথা হয়, গাজীপুরের শ্রীপুরের রিকশাচালক আসাদুজ্জামানের সাথে। আজ চারদিন ধরে তিনি নিয়মিত খাবার খাচ্ছেন। তিনি জানালেন, সম্রাটের খাবারগুলোর মান খুব ভাল। তিন পিচ মাংস, সবজি, ও ডাল দিয়েছে। সাথে এক প্লেট ভরে ভাত। এই খাবার বাইরে খেলে তাদের একশ ২০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা লাগত। সেই খাবার বিনামূল্যে খেতে পারছি।
আরেক রিকশাচালক শামসুদ্দিন। তার বাড়ী রংপুরের পীরগঞ্জে। তিনি জানালেন, মোহাম্মদপুরে তার রিকশা গ্যারেজ। থাকেন, সে এলাকাতেই। এক বন্ধুর মাধ্যমে এই খাবারের খোঁজ জানতে পেরে এক সপ্তাহ ধরে এই খাবার খাচ্ছি। রাতে মোহাম্মদপুর থেকে ভাড়া নিয়ে গুলিস্তান, পল্টন এলাকায় এসে যাত্রী নামিয়ে খাবার খেয়ে আবার যাত্রী নিয়ে মোহাম্মদপুর গিয়ে রিকশা গ্যারেজ করেন।
শুধু রিকশা চালকই নয়, মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন এক প্রতিবন্ধী বেলাল হোসেন। তিনি জানালেন, সবাই গরীব মানুষের জন্য বিনামূল্যে খাবার দেয় না। দিনভর বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করি। রাতে খাবার খেয়ে বাসাই যাই। আল্লাহ’র কাছে দোয়া করি তিনি সাহেবকে (সম্রাট) যেন ভাল রাখেন। মানুষকে যেন খাবার দিতে পারেন। মানুষের পাতে সকলেই ভাত দিতে পারে না-সাহেব দিচ্ছেন-সেটা আল্লাহই হুমুক দিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম