শিরোনাম
- শাজাহানপুরে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কৃষকদলের প্রচার অভিযান
- কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল
- গুরুতর অসুস্থ লঞ্চযাত্রীকে দ্রুত চিকিৎসাসেবা দিল কোস্ট গার্ড
- কক্সবাজারে চার কিশোর নিখোঁজ
- নালিতাবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পর্শে বন্যহাতির মৃত্যু
- আগে বিচার ও সংস্কার, তারপর নির্বাচন : নাহিদ
- ছদ্মবেশ ধারণ করেও বাঁচতে পারেননি ইরানি যে জেনারেল!
- সাবেক সিইসি এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন
- ‘অপারেশন সিঁদুরে তিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত’
- আলোচনায় প্রস্তুত হামাস, আগামী সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে
- ইহুদি খলনায়ক ‘শাইলক’ মন্তব্যে বিতর্কে ট্রাম্প, কিন্তু কেন?
- গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতিই সৌদি আরবের প্রধান অগ্রাধিকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল
- ডিবি পুলিশকে কুপিয়ে জখম মাদক কারবারিদের, মামলা
- দেড় বছরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা
- নতুন স্থানে পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরায় শুরু করতে পারে ইরান: ট্রাম্প
- করাচিতে ভবন ধসে নিহত ১৪
- বাবাকে চিনতেনই না তরুণী, অতঃপর ২৩ বছর পর যেভাবে পুনর্মিলন!
- টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যায় মৃত বেড়ে ২৪
- টেক্সাসে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বন্যায় ১৩ জনের মৃত্যু
- গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে 'ইতিবাচক' হামাস
সুগন্ধা নদীর ব্যাপক ভাঙনে দিশেহারা বরিশালের মহিষাদী এলাকার মানুষ
রাহাত খান, বরিশাল
অনলাইন ভার্সন

সুগন্ধা নদীর ব্যাপক ভাঙনে দিশেহারা বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মহিষাদী এলাকার মানুষ। গত কয়েক বছরে অব্যাহত নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে শত শত একর ফসলী জমি, বসত বাড়ি, গাছপালা, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দোকানপাঠসহ বহু স্থাপনা। নদী ভাঙন প্রতিরোধের জন্য স্থানীয়রা দির্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সব শেষ গত সোমবার রাতে নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে ১৫ বছর আগে নির্মিত সৈয়দ মোশারফ-রাশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল পাকা ভবনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ভাঙনের তীব্রতার কারণে যে কোন সময় নদী গর্ভে চলে যেতে পারে সৈয়দ মোশারফ-রাশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অদুরে থাকা দক্ষিন মহিষাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা পাকা ভবন। শুধু তাই নয়, দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর (দোয়ারিকা) পূর্বপ্রান্তসহ এ্যাপ্রোস সড়ক আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সুগন্ধা নদীর ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার খালিদ হোসেন স্বপনসহ স্থানীয়রা।
এদিকে, এক রাতের নদী ভাঙনে একটি স্কুলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় এবং ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু হুমকিতে পড়ার খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন করেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানকি এবং সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে নদী ভাঙন প্রতিারোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
১৯৯৮ সালে প্রায় ১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৯০ মিটার দীর্ঘ দোয়ারিকা সেতু ও ২৯২ মিটার দীর্ঘ শিকারপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০০৩ সালের ১২ এপ্রিল এই টুইন সেতুর উদ্ধোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। সেতু উদ্ধোধনের সময় দোয়ারিকা সেতুর পূর্বপ্রান্তের পাদদেশ থেকে সুগন্ধা নদী ছিলো অনেক দূরে। মূলত সেতু নির্মাণের প্রয়োজনে নদী শাষণের কারণেই সুগন্ধা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এরপরই থেকেই দোয়ারিকা সেতুর উত্তর-পূর্ব দিকে মহিষাদী গ্রামে সুগন্ধা নদীর ভাঙন শুরু হয়। গত ১৫ বছরে মহিষাদী গ্রামের অর্ধেকের বেশী নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বিস্তীর্ণ ফসলের জমি, গাছপালা, বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দোকানপাঠসহ নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় দিশেহারা ওই এলাকার মানুষ। গত কয়েক দিনে ওই এলাকায় সুগন্ধা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারন করে।
সবশেষ গত সোমবার মধ্য রাতে নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে ওই এলাকায় ১৫ বছর আগে নির্মিত সৈয়দ মোশারফ-রাশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল পাকা ভবনসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। বিদ্যালয় ভবনটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় চিন্তিত ওই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় আপদকালীন সময়ে জন্য স্বল্প পরিসরে অস্থায়ী অবকাঠামো করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলিম রেজা।
ভাঙনের তীব্রতার কারণে মোশারফ-রাশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অদুরে থাকা দক্ষিন মহিষাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একতলা পাকা ভবনও এখন নদী গর্ভে চলে যাওয়া সময়ের ব্যাপার বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুর রহমান। নদী ভাঙনের কারণে দোয়ারিকা সেতুর নিরাপত্তা গাইড ওয়ালের ৯০ ভাগ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখন নদী ভাঙ্গন প্রায় ঠেকেছে সেতুর পূর্বপ্রান্তের মূলে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে দোয়ারিকা সেতুর পূর্বপ্রান্ত সহ এ্যাপ্রোচ সড়কের আশিংক সুগন্ধার কড়াল গ্রাসে হারিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার খালিদ হোসেন স্বপন জানান, দক্ষিনের ৬ জেলার সাথে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু। এই সেতুটি নদী ভাঙনের কবলে পড়লে দক্ষিনাঞ্চলের সাথে সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে আশংকা তার। এই অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সুগন্ধা নদীর ভাঙনের কবল থেকে দোয়ারিকা সেতু রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার স্বপন।
এদিকে, ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু হুমকীতে পড়ার খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শন করেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানকি এবং সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা।
প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানকি বলেন, সুগন্ধা নদীর ভাঙনের কবল থেকে স্থায়ীভাবে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু রক্ষার জন্য ৩ মাস আগে ডিজাইন এবং এস্টিমেট তৈরি করে একটি প্রকল্প সড়ক বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। সড়ক বিভাগ ওই প্রকল্প অনুমোদন করে দিলে নদী ভাঙনের কবল থেকে সেতু রক্ষায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, মানুষ যতটা বলছে- ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু অতটা নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে নেই। গত বছর নদী ভাংগন প্রতিরোধে সড়ক বিভাগ অস্থায়ীভাবে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে। এবারও অস্থায়ীভাবে কিছু প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা করে সেতুর পূর্বপ্রান্ত এবং এ্যাপ্রোচ সড়ক রক্ষার চেষ্টা চলছে।
খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, সারা দেশে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। একমাত্র দোয়ারিকা সেতুর বেলায় পাউবো সড়ক বিভাগের দিকে চেয়ে আছে। তিনি বলেন, দোয়ারিকা সেতু রক্ষায় মাত্র ৫শ’ মিটার স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণ করলেই যথেষ্ট। কিন্তু পাউবো এক দোয়ারিকা সেতু দেখিয়ে সড়ক বিভাগের টাকায় ওই এলাকায় সেতুর দুই পাশে আড়াই কিলোমিটার প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ করতে চাইছে।
বিডি-প্রতিদিন/২৮ আগস্ট, ২০১৮/মাহবুব
এই বিভাগের আরও খবর