জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, তরুণ শিক্ষিত প্রজন্মই সমাজের সত্যিকারের ‘চেঞ্জমেকার’। তারাই ভবিষ্যতের বিশ্বকে গড়ে তুলবে। তবে পরিবর্তনটা যাতে সবসময়ই ইতিবাচক ও মানব জাতির কল্যাণের জন্য হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দেশের ইংরেজি মাধ্যমে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলে ২০১৭-২০১৮ সেশনে অনন্য কৃতিত্ব অর্জনকারী ৬৫৫ শিক্ষার্থীকে ‘চেঞ্জমেকার্স অ্যাওয়ার্ডস’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এবং ইংরেজি পত্রিকা ডেইলি সান এর যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান ও ডেইলি সান পত্রিকার সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, তোমাদের সফল হতে হবে। কাউকেই পিছিয়ে থাকলে চলবে না। এ জন্য তোমাদের প্রস্তুত হতে হবে। কিন্তু শিক্ষা ছাড়া সফল হওয়ার আর কোনো সিঁড়ি নেই। একই সঙ্গে সমাজের লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে শিক্ষাকেই অন্যতম চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
তরুণ প্রজন্মকে তথ্য প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্পিকার বলেন, শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। এ সময় বিশ্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে তিনি শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, মেধাবীদের স্বীকৃতি নতুন মেধাবী তৈরি ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। শিক্ষা কার্যক্রমকে বেগবান ও মেধাবীদের মূল্যায়নের জন্য এ ধরনের সম্মাননা অনুপ্রেরণার সোপান হিসেবে বিবেচিত হবে। তাই শিক্ষার্থীদের শুধু কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত বিষয়ে নয়, এর পাশাপাশি জ্বালানি সংকট, জলাবায়ু পরিবর্তন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শরণার্থী সমস্যা, জলবায়ুর কারণে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যা সম্পর্কেও জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কেননা জ্ঞানই শক্তি।
স্পিকার বলেন, তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এ যুগে নিজেকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলে ইতিবাচক বিশ্ব গড়ায় অংশ নিতে হবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, সাধারণভাবে বলা হয় যে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার্থীদের কাছে বাংলাদেশ এবং এর ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে পর্যাপ্ত জ্ঞান বা আগ্রহ নেই। তোমাদের এই সামাজিক ধারণার পরিবর্তন করতে হবে। তোমাদের এই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং তার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস এবং বিখ্যাত মানুষের কাজের বিষয়ে জ্ঞান জানতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আব্দুল মানান চৌধুরী বলেন, ছাত্রদের উৎসাহিত করার এ প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যাতে করে শিক্ষার্থীরা দেশের ও সমাজের একজন প্রকৃত চেঞ্জমেকার হতে পারে। তিনি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের শিক্ষায় বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় অসামান্য ফলাফল অর্জনকারীদের স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে অন্যান্যদের উৎসাহিত করাই এই আয়োজনের লক্ষ্য।
এ শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘চেঞ্জ মেকার্স অ্যাওয়ার্ডস’ প্রদান করেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে একটি মেডেল এবং একটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম