সাবেক রাষ্ট্রপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বড় অংশ আওয়ামী লীগের দলীয় এজেন্টে পরিণত হয়েছে। তাদের নির্বাচনের কাজে যুক্ত করা যাবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সংসদ ভেঙে দিন। সংসদ সদস্য হিসেবে কারও কোনও ক্ষমতা থাকতে পারে না।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ যুক্তফ্রন্টের সম্প্রসারণ ও বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান।
সংলাপ প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরো বলেন, তারা (ক্ষমতাসীনরা) বলেছিলেন সংলাপ করবেন না। আমরা বলেছিলাম করতে হবে। সংলাপ আহ্বান করায় আমাদের দাবির বিজয় হয়েছে। সংলাপ ছাড়া চলমান সংকটের সমাধান হবে না ।
তিনি আরো বলেন, সংলাপে আমরা দেশের স্বার্থ, মানুষের কথা মাথায় রেখে কথা বলবো। প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করবো এবং কিভাবে তা হতে পারে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা সাপেক্ষে ঠিক করা হবে। কারণ দেশবাসী সুষ্ঠু নির্বাচন পেলেই কেবল সংলাপের বিজয় হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ করতে হবে। ইভিএম ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। নির্বাচন পর্যবেক্ষক আনতে হলে তাদের একমাস আগেই আসার সুযোগ দিতে হবে। যেকোনও কেন্দ্র পরিদর্শন করার সুযোগ দিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি।
বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বি চৌধুরী আরো বলেন, নির্বাচনের সময় সমাবেশ করতে দিতে হবে। সমাবেশ করার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ থাকতে পারে না। নির্বাচনের সময় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনীকে নিয়োগ দিতে হবে। আমাদের সেনাবাহিনী সারা বিশ্বে শান্তি রক্ষা করছে। দেশের শান্তির জন্য কেন কাজ করবে না? সামরিক বাহিনীর কোনও বিকল্প নেই।
গণগ্রেফতারের সমালেচনা করে ঐক্যফ্রন্ট চেয়ারম্যান আরো বলেন, গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। আটককৃতদের মুক্ত করে দিতে হবে। জনসভার ওপর বিধি নিষেধ চলবে না। এদেশে পুলিশের অনুমতি নিয়ে জনসভা করতে হবে? এর চাইতে লজ্জ্বার বিষয় আর হতে পারে না।
দেশে উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে দাবি করে বি চৌধুরী বলেন, যে উন্নয়ন হয়েছে, তাতে ৫০ শতাংশ দুর্নীতি হয়েছে। ডিজিটাল আইন করা হয়েছে, সাংবাদিকদের কলম বন্ধ হয়েছে। তাদের মুখ বেঁধে দেয়া হয়েছে। তাদের হাত পায়ে শিকল লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণের কন্ঠরোধ করে দেয়া হয়েছে। এ আইন বাতিল করতে হবে। উন্নয়ন দেবেন, অথচ গণতন্ত্র দেবেন না, তা হবে না। জনগণ এমন উন্নয়ন চায় না। গণতন্ত্রকে মাইনাস করে উন্নয়ন হবে না। তিনি বলেন, আমরা দেশে অশ্রদ্ধার রাজনীতি চাই না। শ্রদ্ধার রাজনীতি দিয়ে দেশকে ভরে দিতে চাই।
বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, আমরা সংলাপে যাবো। সেখানে আমরা অবশ্যই খাবো। আমরা ডাল-ভাত খেতে যাবো। ১৭ রকম খাবার খাবো না। ডাল, ভাত, মাছ খাবো। লাল রুটি খাবো।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈশা, বিকল্প ধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে যুক্তফ্রন্টে যুক্ত হওয়া ৬টি দলের মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনোরিটি ইউনাইটেড ফ্রন্ট।
এছাড়া বিকল্পধারায় যোগ দিয়েছেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) নেতা মো. গোলাম রেজা, গণফ্রন্ট নেতা কামাল পাশা, মুসলিম লীগ নেতা নূর এ আলম, জনদল নেতা জয় চৌধুরী ও খলিল চৌধুরী।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন