শিরোনাম
- রংপুর সদর আসনে বিএনপির সামু’র নির্বাচনী প্রচারণা
- বগুড়ার সাবেক ডিসির বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীর মামলা
- নারায়ণগঞ্জে যৌথ অভিযানে ৩ কোটি টাকার চায়না দুয়ারি জাল জব্দ
- চট্টগ্রামে শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
- কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ ও থানায় ককটেল হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
- হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় দেশবাসীকে স্বস্তি দিয়েছে : আমানউল্লাহ
- আখাউড়ায় ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আটক ২
- ‘হাসিনার রায়ের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হয়েছে’
- শেকৃবিতে পুনর্জন্ম কৃষি নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত
- মাটিরাঙ্গায় ইমাম–ওলামাদের নিয়ে বিএনপির মতবিনিময় সভা
- বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা থেকে ৩ ককটেল উদ্ধার
- তারুণ্যের উৎসবে বারি’র প্রযুক্তি প্রদর্শনী ও কর্মশালা
- রংপুর বিভাগের ৫৩ ‘জুলাই যোদ্ধার’ গেজেট বাতিল
- সাগরপথে মানবপাচারের প্রস্তুতিকালে আটক ৪
- হাসিনা-রেহানা ও টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত
- উত্তর কুয়েতে ৭,৭০০ বছরের প্রাচীন ভাটির সন্ধান
- দুই লাখ ২০ হাজার টন সার কিনবে সরকার
- তরুণ প্রজন্ম দেশকে উদ্যোক্তা বান্ধব রাষ্ট্রে পরিণত করবে : প্রাথমিক উপদেষ্টা
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে চার জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯২০
- কান্নার শব্দে ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার হলো ২ দিনের নবজাতক
ট্রেনের অনলাইন টিকিটেও কালোবাজারির হাত!
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
অনলাইন ভার্সন
করোনার মহামারির কারণে দীর্ঘ ৬৮ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে থেকে চলছে যাত্রীবাহী ট্রেন। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এখন শতভাগ টিকিট ছাড়া হচ্ছে অনলাইনে। কিন্তু সেখানেও হাত পড়ছে কালোবাজারির। রাজশাহীতে বছরের পর বছর যারা কালোবাজারি হিসেবে চিহ্নিত, তাদের কাছেই মিলছে ট্রেনের টিকিট। কিন্তু অনলাইনে ছাড়ার পাঁচ মিনিট পরই আর টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে এখন ছয়টি ট্রেন চলাচল শুরু করেছে। এগুলো হলো-‘বনলতা এক্সপ্রেস’ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা), ‘কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস’ (রাজশাহী-খুলনা), ‘মধুমতি এক্সপ্রেস’ (রাজশাহী-রাজবাড়ি), ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ (লালমনিরহাট-ঢাকা), ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ (খুলনা-ঢাকা) এবং ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ (পঞ্চগড়-ঢাকা)। অর্ধেক সিট ফাকা রেখে ট্রেনগুলো চলাচল করছে আগের সময়েই।
কিন্তু বরাবরের মতো এখনও ট্রেনের টিকিট যেন সোনার হরিণ। টিকিট ছাড়ার তিন থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ন্যানো সেকেন্ড দেরি করলেই কপালে টিকিট মিলছে না। অথচ রাজশাহীতে কালোবাজারিদের হাতে ঠিকই মিলছে টিকিট। চড়া দামে যাত্রীদের তাদের কাছ থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এমন দুই কালোবাজারিকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
তারা হলেন, নগরীর শিরোইল মঠপুকুর এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে মাবুদ খান ওরফে রিমন (১৯) এবং শিরোইল স্টেশনপাড়া এলাকার মৃত ভাদু শেখের ছেলে লিয়াকত আলী (৫৩)। তাদের মধ্যে লিয়াকত টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতা। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এই কারবারের সঙ্গে জড়িত। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) নগরীর শিরোইল কাঁচাবাজার বাস্তুহারা এলাকা থেকে লিয়াকত ও রিমনকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৩টি টিকিট উদ্ধার করা হয়। টিকিটগুলোতে ৪৫টি আসন ছিল। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
কিন্তু এখনও অনেকেই আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের মধ্যে আছেন শিমুল, শাহীন, বাপ্পি, দুলাল, রকি হাসান, মামুনুর রশিদ মাসুম, আহসান হাবীব সনি, মেহেদী হাসান শান্ত এনামুল হক প্রমুখ। অতিরিক্ত টাকা দিলেই তাদের কাছে মেলে ট্রেনের টিকিট। রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় তাদের বাড়ি। তারা সব সময় শিরোইল ও স্টেশনের সামনেই ঘোরাফেরা করে। রেলের কিছু যাত্রী তাদের কাছ থেকে নিয়মিত টিকিট কেনেন অতিরিক্ত টাকায়। রেলের কোন কোন নিরাপত্তাকর্মীর কাছেও পাওয়া যায় টিকিট। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করেই তারা টিকিট সংগ্রহ করেন বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরাসরি যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি ছাড়াও কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করছেন। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রকাশ্যে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। কালোবাজারির টিকিট বিক্রির জন্য ফেসবুকে খোলা হয়েছে অনেক গ্রুপ ও পেইজ। এসব স্থানে রাজশাহী থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেনের যাত্রার তারিখ ও সময় লিখে টিকিট থাকার কথা জানানো হচ্ছে। যারা ঠিক ৬টায় অনলাইনে ঢুকেও টিকিট পাচ্ছেন না তারা এসব টিকিট কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, গেল বছরের শেষের দিকে ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম ও কালোবাজারিদের সঙ্গে যোগসাজশ থাকার অভিযোগে সিলেট স্টেশনের ছয় বুকিং সহকারীসহ আটজনকে রেলের পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহীতে বদলি করা হয়। এরা রাজশাহীতে এসেও কালোবাজারি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এখন কাউন্টার বন্ধ থাকায় বুকিং সহকারীদেরও কোনো কাজ নেই। কিন্তু তারপরও কোন কোন বুকিং সহকারী টিকিট কালোবাজারি চক্রের সঙ্গে কাজ করছেন।
এ কারণে অনলাইনেও টিকিটের আকাল। এখন তিন থেকে পাঁচ মিনিটের মধ্যে অনলাইনের টিকিট শেষ হয়ে যায়। ঈদুল আজহার আগে প্রথম অনলাইনে যেদিন আগাম টিকিট ছাড়া হয়েছিল সেদিন তো মাত্র চার সেকেন্ডে টিকিট শেষ হয়ে যায়। মাত্র ন্যানো সেকেন্ডের ব্যবধানে অনেকে পাননি কাঙ্খিত টিকিট। এ নিয়ে অনেকেই রেল সংক্রান্ত ফেসবুক গ্রুপগুলোতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমনকি অনেকে ট্রেনের টিকিটে কারসাজি চলছে বলেও সরাসরি অভিযোগ করেন। কিন্তু সমস্যা এখনও কাটেনি।
টিকিট কালোবাজারির অভিযোগের বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ দাবি করেন, এখন সব টিকিট অনলাইনে। যিনি আগে ঢুকবেন, তিনি টিকিট পাবেন।
তিনি বলেন, গ্রাহকের এত চাপ যে অনলাইনে পাঁচ-ছয় মিনিট টিকিট থাকে। সেই সময়ের মধ্যেই যদি কালোবাজারিরা অতিরিক্ত টিকিট কিনতে পারেন, তাহলে এটাকে তাদের দক্ষতাই বলতে হবে। তবে কালোবাজারিদের সঙ্গে রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশের তথ্য নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
এই বিভাগের আরও খবর