১ মার্চ, ২০২১ ১৭:২৩

ফ্রিজ মার্কেটের ৮০ ভাগ দখলে রেখেছে দেশি ব্রান্ডগুলো

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ফ্রিজ মার্কেটের ৮০ ভাগ দখলে রেখেছে দেশি ব্রান্ডগুলো

তুলনামূলক কম মূল্যে ভালোমানের রেফ্রিজারেটর উৎপাদনের মাধ্যমে দেশি ব্রান্ডগুলো দেশের ফ্রিজের বাজার দখলে রেখেছে। বর্তমান ফ্রিজ মার্কেটের প্রায় ৮০ শতাংশ দখলে রেখেছে তারা। এর বাহিরে বিদেশী ব্রান্ডগুলোর হাতে আছে ১১ শতাংশ মার্কেট শেয়ার।  

সম্প্রতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশে’র এক গবেষণায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে আয়োজিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা। 

গবেষণাটি করেন মার্কেটিং বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান ও এমডব্লিউবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হোসাইন ও ড. রাফিউদ্দীন আহমদ এবং গবেষক সাখাওয়াত হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে ড. মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, দেশি ব্রান্ডগুলোর মধ্যে ৬৬ শতাংশ ফ্রিজ মার্কেট এককভাবে দখলে রেখেছে ওয়ালটন। বাকিগুলো মার্সেল, সিঙ্গার ভিশন, মিনিস্টারসহ অন্যান্যদের দখলে। আর ১১ শতাংশ বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে সিঙ্গার, স্যামসাং, শার্প, এলজি উল্লেখযোগ্য।

তিনি জানান, মোট ২ হাজার ৪৪০জন ফ্রিজ ব্যবহারকারী, ৩ হাজার ৮৬০ অনলাইন ক্রেতার প্রতিক্রিয়া, বিশেষজ্ঞ সমীক্ষা ও ৯টি টিভি বিজ্ঞাপন বিশ্লেষণ প্রভৃতির মাধ্যমে গবেষণাটি করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় দুই দশক ধরে শহরের তুলনায় গ্রাম ও উপশহরের ফ্রিজের ব্যবহার বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতায়ন ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রেতা বান্ধব শর্তাবলীর (কিস্তিতে ক্রয়, ওয়ারেন্টি) এর পিছনে ভূমিকা রেখেছে। ২০১০ সালের পর দেশী ব্রান্ডগুলোর হাতের ফ্রিজ মার্কেটের শেয়ার আসতে শুরু করে। ২০১৫-২০১৯ এ পাঁচ বছরে ফ্রিজ শিল্প গড়ে ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ হারে বেড়েছে। দেশীয় ব্র্যান্ডের নিত্য নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছে। 

গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্রেতা দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর উপর সন্তুষ্ট। বেশিরভাগ ক্রেতা মনে করে, অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে তুলনামূলকভাবে ভালো মানের ফ্রিজ দেশিয় কোম্পানীগুলো বাজারে আনতে সক্ষম হয়েছে। ক্রেতারা ফ্রিজ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ফ্রিজের সাশ্রয়ী মূল্য, স্থায়িত্ব, বিদ্যুত সাশ্রয়, ডিজাইন, কম্প্রেসার, ওয়ারেন্টি, বিক্রয়োত্তর সেবা এবং অভিনব প্রযুক্তির ব্যবহারকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তবে ব্যবহারকারীদের কিছু বিষয়ে অভিযোগও রয়েছে। সেগুলো হলো, স্বল্প শীতলীকরণ ক্ষমতা, ওয়াটার লিকেজ ,কম্প্রেসারের উচ্চ শব্দ, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ, বেশি বরফ জমা, নির্দিষ্ট সময় পর পর কম্প্রেসারের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি।

গবেষণায় অনলাইনভিত্তিক মার্কেটিং কার্যক্রম বৃদ্ধি করা, ক্রেতা সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন করা, বিক্রয়োত্তর সেবার মান বৃদ্ধি করা, নির্দিষ্ট সময় পর কোম্পানির উদ্যোগে ফ্রিজ চেক করা ও ক্রেতাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে তা সমাধানের সুপারিশ করা হয়। গবেষকেরা মনে করেন, সর্বোপরি দেশীয় ব্রান্ডগুলোকে আরও এগিয়ে নিতে সরকারী বিশেষ পলিসি গ্রহণ করলে অদূর ভবিষ্যতে ফ্রিজ রপ্তানীরও সুযোগ তৈরি হবে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর