নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে কার্টুনিস্ট কিশোরকে অমানবিক নির্যাতনের যে বর্ণনা কিশোরের সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তা বিগত ১৩ বছর ধরে এই রাষ্ট্রের চিত্র। বর্তমান সরকার অবৈধভাবে তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে বিরোধী মতের উপর অমানবিক ও নিষ্ঠুর বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ সব কথা জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে কালো আইনের মাধ্যমে জনগণের মন প্রকাশের স্বাধীনতা পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, রিমান্ডে নারকীয় নির্যাতন বর্তমান ক্ষমতাসীনদের শাসনকালে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার দল নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় হেফাজতে কার্টুনিস্ট কিশোরের উপর অমানুষিক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, একই মামলায় গ্রেফতার লেখক মুশতাক আহমেদের কারগারে মৃত্যু এবং কার্টুনিস্ট কিশোরের উপর নির্যাতনের সম্পূর্ণ দায় সরকারকে নিতে হবে। কিশোরের জামিনে মুক্তির পর আমরা তার উপর হওয়া নির্যাতনের বিষয়ে জানতে পারলাম। মুশতাকের মৃত্যুর পর দেশব্যাপী যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, তাতে আশা করেছিলাম সরকার এই অত্যাচার থেকে সরে আসবে। কিন্তু ময়নাতদন্তের আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন মুশতাকের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কারাগারে অসুখে যেকোনো মানুষ মারা যেতেই পারে। এসব থেকে বোঝা যায় মুশতাকের মৃত্যুর আসল রহস্য সরকার প্রথম থেকেই গোপন করতে চেয়েছে। এও বোঝা যায়, এই সরকার তাদের স্বৈরাচারী আচরণ থেকে সরে আসবে না। বরং রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে এসব বিচার বহির্ভূত অত্যাচার, হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে মান্না বলেন, আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি-এই সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়, মানুষের জীবন নিরাপদ নয়। একটি মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই সরকারকে এখনই অপসারণ করতে হবে। আমরা আগেই ঘোষণা করেছি স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী অর্থাৎ ২৬ মার্চের মধ্যে এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। অন্যথায় গণঅভ্যূত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করা হবে। আমি দল, মত নির্বিশেষে দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সকল বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান অবৈধ, ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন