রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জে ভারতীয় ভিসা সেন্টার। এই ভিসা সেন্টার থেকে প্রতিদিন ২৫০-এর বেশি ভিসা দেওয়া হতো। এর অর্ধেকই ছিল চিকিৎসা ভিসা। গত বছরের মার্চে করোনা শুরু হওয়ার পরে ভারত সরকার ভিসা প্রদান বন্ধ করে দেয়।

এতে গত ১৫ মাসে এই অঞ্চল থেকে কমপক্ষে ১ লাখের বেশি রোগী চিকিৎসার জন্য ভারত যেতে পারেননি। এসব রোগী দেশেও ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। অনেকে চিকিৎসার অভাবে মারাও যাচ্ছেন। অপরদিকে, অর্ধশত ভিসা প্রসেসিং সেন্টারের মালিক-কর্মচারীদের চলছে দুর্দিন।

তার মতো অনেকেই ভিসা বন্ধ থাকায় চিকিৎসার জন্য ভারত যেতে পারেননি। করোনার কারণে রংপুরে অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিয়মিত রোগী না দেখায় ভারতে চিকিৎসাধীন রোগীরা দেশেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে ভারতীয় প্রেসক্রিপশনের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশি ওষুধ সেবন করছেন।

রংপুর ভিসা সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সেন্টারে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫০ জনকে ভারতে যাওয়ার ভিসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে চিকিৎসা ভিসাই ৫০ শতাংশ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড়শ জন চিকিৎসা ভিসা নিয়ে ভারতের কলকাতা, দিল্লী, চেন্নাই ও ভেলর ইত্যাদি এলাকায় যেতেন।

ভারতীয় ভিসা সেন্টারের তথ্য মতে, প্রতিমাসে কমপক্ষে ৬ হাজার মানুষ রংপুর ভিসা সেন্টার থেকে ভিসা নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে যেত। এসব রোগী লালমনিরহাটের বুড়িমারী, যশোরের বেনাপোল, দিনাজপুরের হিলি ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধাসহ বিভিন্নস্থল বন্দর দিয়ে ভারতে গমন করতো।

মাহতাব ভিসা সেন্টারের মালিক মাহতাব হোসেন ও মাহাবুব আইটি সেন্টারের মালিক মাহাবুব হোসেন জানান, করোনা শুরু পর থেকেই ভিসা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মাস খানেক আগে বাংলাদেশে আটকে পড়া মানুষদের ভিসা দেওয়া হয়েছিল। রবিবার থেকে আবার ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। ফলে মাহিগঞ্জ ৪৮টি ভিসা প্রসেসিং সেন্টার বন্ধ রয়েছে। রংপুর থেকে ভিসা সেন্টার চালুর পর ভিসা পাওয়ার অর্ধেক মানুষই চিকিৎসা করাতে যেত। ভিসা দেওয়া বন্ধ থাকায় রংপুর অঞ্চলের এক বছরে কমপক্ষে এক লাখের বেশি রোগী ভারতীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে তারা জানান।

বিডি প্রতিদিন/এমআই