জিয়া-খালেদা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে মানুষকে কী দিয়েছে প্রশ্ন করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস. এম. কামাল হোসেন বলেছেন, জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে মানুষকে ধোঁকা দেয়া, মিথ্যা-অপপ্রচারা করা, মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, লাশের উপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করা ছাড়া আর কি করেছেন!
সোমবার সাভার থানার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখল করে স্বাধীনতা স্বপক্ষের শত শত সোনাবাহিনীর অফিসাদের হত্যা করেছে। বিমান বাহিনীর ৫৫১ জন অফিসারকে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। ঠিক সেই অন্ধকারের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। সংগ্রাম করেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যাকেও ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি মৃত্যুকে উপেক্ষা করে আজকে দেশটাকে কোথায় নিয়ে গেছে! শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত হয়েছে। উন্নয়ন ও মর্যাদাশীল দেশ হিসাবে বিশ্বের বুকে মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে।
গুজবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান উল্লেখ্য করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুতে অনিয়-দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হলো। কানাডার আদালতে মামলা হলো। খালেদা জিয়া বললেন, জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হচ্ছে- কেউ হাটতে পারবে না। গুজব ছড়ালো পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে, রক্ত লাগবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততা ও সাহসীকতার সাথে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করলেন। কানাডার আদালত বললো, যারা পদ্মাসেতুর দুর্নীতির কথা বলেছেন তারা মিথ্যা-ভুয়া। ওই সকল গুজব ও ষড়যন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান হয়েছে।
বিএনপির অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপি বলেছিলো- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে আযান হবে না, মসজিদে উলুধ্বনি বাজানো হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ হাজার ৭’শ কোটি টাকায় ৬৫০ টি আধুনিক মসজিদ করেছেন, করোনায় ৮৬৭ টি কওমি মাদ্রাসায় নগদ অর্থ দিয়েছেন, মসজিদের ইমামকে টাকা দিয়েছেন, ১ কোটি লোককে ১০ টাকা কেজি চাউল দিয়েছেন। বিএনপি অপপ্রচার ও মিথ্যাচার ছাড়া কিছু পারে না। তারা (বিএনপি) ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়। বিদেশীদের উপর ভর করে ক্ষমতায় যেতে চায়। আপনাদের মনে আছে- বিজেপি যখন ক্ষমতায় আসলো- বিএনপি আনন্দ মিছিল করলো। অফিসে মিষ্টি বিতরণ করলো। মির্জা ফখরুল বললো- মোদীর বিজয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে হতাশ। আর খালেদা জিয়া আগাম ধন্যবাদ দিলো। জঙ্গী ও বিদেশীদের ওপর ভর করে বিএনপি ক্ষমতার দিবাস্বপ্ন দেখলো। পরে তারা দেখলো জনগণ পক্ষে না থাকলে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, যে পাকিস্তানের জন্য জিয়াউর রহমান কেঁদেছিল, জিয়ার বউ কাঁদে, ছেলে কাঁদে, মির্জা ফখরুলরা কাঁদে- সেই পাকিস্তানের অর্থনীতিবিদ- যিনি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধি তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, ২০৩০ সালের পর আমাদের শেখ হাসিনার কাছে হাত পাততে হবে। শ্রমজীবী মানুষের দোয়া আছে জন্যই শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন এবং শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে বলে দাবি কলেন এস এম কামাল হোসেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন আরও বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে খুনি খন্দকার মোস্তাক, জিয়া গংরা যড়যন্ত্র করে যেভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, ঠিক একই কায়দায় খুনি জিয়ার পুত্র তারেক রহমান ২০০৪ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিল। ওইদিনও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান নেত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে যা দিয়েছেন এবং মানুষের কল্যাণে যা করেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আর কেউ তা করে দেখাতে পারে নাই।
কাউন্দিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ মাষ্টারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান বজলু, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মিরপুর ১৪ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আগা খান মিন্টু, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: হানিফ। সভা পরিচালনা করেন কাউন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান শান্ত।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল