প্রথমবারের মতো 'আতাউস সামাদ স্মৃতি ২০২১' পুরস্কার পেয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ফটোসাংবাদিক এবিএম রফিকুর রহমান। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বরেণ্য সাংবাদিক, শিক্ষাগুরু আতাউস সামাদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে’ আয়োজিত এক স্মরণসভায় তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

সারা বছর কাজের গুরুত্ব ও মর্যাদা বিবেচনায় দেশের বরেণ্য এই ফটোসাংবাদিককে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের কোনো ফটোসাংবাদিক হিসেবে রফিকুর রহমানই প্রথম পেলেন এই স্বীকৃতি ও সম্মাননা। রয়টার্সের সঙ্গে তার যুক্ততা ৪০ বছর। আর প্রথমবারের মতো 'আতাউস সামাদ স্মৃতি' তাকে এই পুরস্কার প্রদান করে।

স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার মন্তব্য করে বলেন, আমরা জানি, সাংবাদিকরা এখন কি বিপদের মধ্যে রয়েছে। কারণ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা মালিক হরণ করছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রও হরণ করছে। তখন সাংবাদিকদের স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। 

আতাউস সামাদের প্রতি স্মৃতিচারণ করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের সকলেরই স্মরণীয় হয়ে আছে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় তিনি পাকিস্তান অবজারভারের সংবাদদাতা ছিলেন। কিন্তু তিনি আরেকটা বড় কাজ করেছিলেন। সেটা হচ্ছে, শেখ মুজিবুর রহমানের চিঠি মাওলানা ভাসানীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ ছিলো। এই যে কাজ, এটা তো অন্য কোনো সাংবাদিক করতে পারলেন না। এরকম ঘটনা একজন সাংবাদিকের জীবনে সবসময় আসে না। আমরা তাকে দেখেছি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান সময়, একাত্তরের যুদ্ধের সময় এবং এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময়। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি কারাভোগ করেছেন। এটা ঐতিহাসিক ঘটনা।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আতাউস সামাদ যখন একটি রিপোর্ট কনসেপ্ট করতেন, সেটি ডেলিভারি হওয়া পর্যন্ত তিনি শান্তি পেতেন না। কিছুতেই শান্ত হতেন না। মাঝে মধ্যে ফোন করলে তিনি এক ঘণ্টার মত কথা বলতেন। এর কারণ হচ্ছে, তিনি সেখান থেকে খবরটা বের করতে চান এবং বের করতেন।

আজকের পত্রিকার সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান বলেন, আতাউস সামাদ সত্যের উপর ভিত্তি করে সাংবাদিকতা করেছেন। তিনি সবদিক থেকে তথ্যকেই মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি ছিলেন সত্যান্বেষী, এটাই তার সবচেয়ে বড় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও কবি হাসান হাফিজের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, কবি হেলাল হাফিজ, বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী,  জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, দি নিউনেশন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, দি ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, মুন্নী সাহা, একেএম মহসিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল