‘১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে ‘বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতির ওপর পাকিস্তানের যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল তা এখনো বন্ধ হয়নি। ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতাযুদ্ধে আমরা পাকিস্তানিদের পরাজিত করে সেই ষড়যন্ত্রের জবাব দিয়েছি। কিন্তু এখনো বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি পাকিস্তান ও তাদের অনুসারীদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে।’
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘একুশ থেকে একাত্তর : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন বক্তারা।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মিডিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডেভেলপমেন্ট (মেড) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন মেড'র উপদেষ্টা ও ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব) সভাপতি বাসুদেব ধর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুণ হাবীব (সেক্টর কমান্ডার ফোরামের মহাসচিব, মুক্তিযুদ্ধ-৭১)।
এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বাংলাদেশ-ভারত সম্প্রীতি পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. ফজলে আলী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, গ্রীন ক্লাব অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রানী, ইমক্যাব কোষাধ্যক্ষ আমিনুল হক ভূঁইয়া, মেড-এর নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম সবুজ।
সভায় বক্তারা বলেন, ৫২-তে উর্দুকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল এই বলে যে উর্দু হচ্ছে মুসলমানদের ভাষা, ইসলাম ধর্মের ভাষা। বিষয়টি অসত্য। কিন্তু পাকিস্তানের কোনো প্রদেশেই কিন্তু প্রাদেশিক ভাষা উর্দু নয়। মুসলিম বিশ্বেও আরবি মুসলিমদের ভাষা নয়। তুর্কি, পারসি মুসলিমদের ভাষা নয়। পাকিস্তানিরা একটি সাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে একটি ভাষার চরিত্র নির্ধারণ করেছিল। বলা হয়েছিল বাংলা ভাষা হচ্ছে হিন্দুদের ভাষা আর উর্দু হচ্ছে মুসলিমদের ভাষা। একটি অসত্য চিন্তা দিয়ে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে এই ভাষাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা হয়েছিল। সংস্কৃতিগত ও জাতীয়তাবাদী চেতনার জায়গা থেকে তুলে ফেলা এবং সাম্প্রদায়িক চরিত্র দিয়ে একটি ভিনদেশি ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন হয়েছে এবং সেই পথ ধরেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন