সারা দেশের মতো গাজীপুরের কালিয়াকৈরেও বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে করোনা সুরক্ষা টিকা। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দিনব্যাপী উপজেলার দুটি কেন্দ্রে ১০ হাজার শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করা হয়। তবে বিনামূল্যের এ টিকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিনামূল্যের টিকায় টাকা আদায়ের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার আনসার ভিডিপি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টিকা আনা-নেওয়া, নার্স, স্বেচ্ছাসেবক, গাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন খরচের কথা বলে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা করে নিয়েছে। আর এভাবেই প্রতি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের থেকে ১ হাজার টাকা থেকে ১৯ হাজার টাকা আদায় করেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
বিনামূল্যের টিকায় টাকা আদায়ের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এছাড়া ওই টিকা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না। গাদাগাদি করে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী টিকা গ্রহণ করেছে। এসময় কারো কারো মুখেও ছিল না মাস্ক। এ টিকা নিয়ে ওই কেন্দ্রে দিনব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কি ও প্রখর রোদে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মেনে এভাবে গাদাগাদি করে টিকা প্রদানের কারণে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ওই টাকা তুলে প্রতি প্রতিষ্ঠান থেকে ১ হাজার থেকে ১৯ হাজার টাকা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দেওয়া হয়েছে। তবে টিকা আনা-নেওয়া, নার্সসহ বিভিন্ন খরচের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ওই টাকা নেওয়া হয়। এর আগেও যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী টিকা দিয়েছে, তাদের কাছ থেকেও টাকা নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, আমাদের একটা খরচ আছে, যারা টিকা দেন তাদের গাড়ি ভাড়া, খাবার-দাবার ও টিকা বহন করা বাবদ কিছু টাকা নেওয়া হচ্ছে। প্রতি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করে ওই টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়টি ইউএনও স্যারও জানেন।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো উপায় নেই জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, টাকা নেওয়ার বিষয়টি ওই দপ্তরের অভ্যন্তরীণ আয়োজন। টিকা আনা-নেওয়ার বিষয়ে হাসপাতাল একটা খরচও বহন করে না। সেই ক্ষেত্রে কিছু টাকা নেওয়া হতে পারে।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন খাইরুজ্জামান জানান, টিকা গ্রহণ বাবদ টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ টিকা বাবদ টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই