রাজশাহীর পবা উপজেলার হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষককে কান ধরিয়ে ওঠবস করানোর অভিযোগের তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত বুধবার হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসী তার স্কুলের এক সহকারী শিক্ষককে স্কুলে কান ধরে ওঠবস করান বলে অভিযোগ ওঠে। স্কুলের জমিদাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আজিজের সামনে এভাবে হেনস্তার অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল সোমবার তিনি তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন। এরপর সেদিনই বিকালে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, ‘প্রতিবেদন আমি হাতে পেয়েছি। তদন্তে কী পাওয়া গেছে সেটি আমি বলতে চাচ্ছি না। তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে এসেছি। আমরা এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেব, আপনারা তা দেখতে পাবেন।’
উল্লেখ্য, তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিললেও গত রবিবার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সংবাদ সম্মেলন করে তা অস্বীকার করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মুশফিকুর রহমান রাসেল বলেন, ওই সহকারী শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসীর ছবি ব্যবহার করে অশালীন, নোংরা চারটি টিকটক ভিডিও তৈরি করে প্রচার করছিলেন। তিনি এসব অশালীন ভিডিও তৈরি করে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের দেখিয়ে হাসাহাসি করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তার ফেসবুক আইডি থেকে প্রধান শিক্ষকের একাধিক ব্যক্তিগত ছবি ‘মাই স্টোরি’তে আপলোড করেছেন।
এ ব্যাপারে তাকে সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি এ ধরনের কার্যকলাপ অব্যাহত রাখেন। তাই এলাকার প্রবীণ বিদ্যানুরাগী হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আজিজকে বিষয়টি অবগত করেন প্রধান শিক্ষক। ওই সহকারী শিক্ষক আবদুল আজিজকে চাচা বলে ডাকেন। তাই তিনি ওই শিক্ষককে সামান্য বকাঝকা করেন। তাকে কান ধরে ওঠবস করানোর মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি দাবি করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোমিনুল ইসলাম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আজিজও উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর