চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে নির্বাচন কমিশন থেকে সময়সূচী, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আপিল কর্তৃপক্ষ নিয়োগ, মনোনয়নপত্র আহ্বানের বিজ্ঞপ্তি জারি, মনোনয়নপত্র দাখিল, মনোনয়নপত্র বাছাই এবং অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রংপুর বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে ৩ জেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হতে পারেননি।
জেলাগুলো হচ্ছে পঞ্চগড়, গাইবান্ধা ও নীলফামারী। এসব জেলা পরিষদ আওয়ামী লীগ পুনরুদ্ধার করতে পারবে না কি আরও দুই-একটি জেলা পরিষদ আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হবে এ নিয়ে চলছে বিশ্লেষক মহলে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মত জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর। ওইসব জেলা পরিষদের মেয়াদকাল শেষ হলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। সব শেষে দ্বিতীয়বারের মত জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা গেছে, বিগত নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুরে একজন করে প্রার্থী থাকায় তারা এমনিতেই বিজয়ী হয়েছেন। রংপুরে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট ছাফিয়া খানম, লালমনিরহাট জেলায় আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, কুড়িগ্রামে আওয়ামী প্রার্থী মো. জাফর আলী নির্বাচিত হন। এছাড়া গাইবান্ধায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান আতা, নীলফামারী জেলায় জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী বীর-মুক্তিযোদ্ধা জয়রাল আবেদীন, পঞ্চগড়ে জেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমানুল্লাহ বাচ্চু নির্বাচিত হয়েছিলেন। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী এবং ঠাকুরগাঁও জেলায় আওয়ামী লীগের মুহা. সাদেক কুরাইশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি জেলায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়-ঝাপ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিগত নির্বাচনে রংপুর বিভাগে আওয়ামী লীগ ৩ জেলায় হেরেছে। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কারণে বর্তমান সরকার সমালোচনায় রয়েছে। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের হয়ত আরও দুএকটি জেলা হাতছাড়া হতে পারে জেলা পরিষদ নির্বাচনে।
তবে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ হারানো জেলা পরিষদ প্রসঙ্গে বলেন, এবার রংপুর বিভাগে হারানো তিনটি জেলা পরিষদ উদ্ধার হবে। ইতোমধ্যে ঘোষণা এসেছে যারা গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী ছিল তারা এবার মনোনয়ন পাবেন না। পঞ্চগড়, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলায় আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে অনেক সুসংগঠিত। তাই এবার রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন। নিজের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমে আমি জেলা পরিষদের দায়িত্বে ছিলাম। এবার দল যদি তাকে মনোনয়ন দেন তাহলে তিনি নির্বাচন করবেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম সাহতাব উদ্দিন বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ইভিএমে ভোট হবে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন পত্র দাখিল, ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাই, ২৫ সেপ্টেম্বর প্রত্যাহার এবং ১৭ অক্টোবর ভোট গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর