রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগে এবার কার্যালয় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন জেলা আওয়ামী লীগকে কোটি টাকা মূল্যের ৮ কাঠা জমি বরাদ্দ দেয়। সেখানে গত শুক্রবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবালসহ জেলার নেতৃবৃন্দ দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।
এরপরই আলোচনায় আসে রাজশাহী-৪ আসনের এমপি এনামুল হকের কিনে দেওয়া সিলিন্দা এলাকার জমিটি। রাজশাহী সিটি বাইপাস এলাকায় ১০ কাঠা জমিটি এনামুল কিনে দেন। সেখানে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ হচ্ছে। এতোদিন সেই জমি ও ভবন নিয়ে কোনো আলোচনা ছিল না। নতুন কার্যালয়টির যাত্রা শুরুর পরই সিলিন্দার জমি ও ভবন নিয়ে বিভক্ত আওয়ামী লীগ।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘আমাকে কখন-ই ওই জায়গার জমি সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। জেলা কমিটির মেয়াদ এক বছরের বেশি। এসময়ের মধ্যে এমপি এনামুল হক কোনোদিনই জেলার নেতৃবৃন্দকে ভবন নির্মাণ সম্পর্কেও কিছু জানাননি। আমরা তো মনে করেছিলাম, ওইখানে তার ব্যক্তি চেম্বার হচ্ছে। এখন যেহেতু তিনি বলছেন, ওইটি জেলা আওয়ামী লীগের জমি। তাহলে তো আমাদের ভালোই হলো। দুটি অফিস হবে। নেতাকর্মীদের জন্য বড় পরিসরে বসার ব্যবস্থা করা যাবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের ভবন করার জন্য ২০১৭ সালে নগরীর সিটিহাট এলাকায় ১০ কাঠা জমি কিনে দেন রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হক। এই জমিটির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এখন সেখানে প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ করে সাড়ে চার হাজার স্কয়ার ফুটের একটি ভবনও নির্মাণ হচ্ছে। তবে কখন-ই ভবন নির্মাণকাজে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও এমপি এনামুল হক মাঝে মাঝে সেখানে কাজ পরিদর্শন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দিতেন।
নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর অলকার মোড়ের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সাংগঠনিক কার্যালয় গড়ে তোলে। এরমধ্যেই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলীয় কার্যালয়ের জন্য জায়গা চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। আবেদনের ভিত্তিতে নগরীর রাণীবাজার এলাকার ৮ কাঠা অর্পিত সম্পত্তি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জমিটি বুঝে নিয়ে সেখানে ঘটা করে উদ্বোধনের পর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় বলে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে।
এমপি এনামুল হক বলেন, ‘দলকে ভালোবেসে আমি দলের নামে জমি রেজিস্ট্রি দিয়ে ২০১৭ সালে জেলা আওয়ামী লীগের তখনকার কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ে দলিল সাবমিট করেছি। তারা গ্রহণ করেছে। এখন তারা মনে করছে আসাদের সময় জমির রেজিস্ট্রি হয়েছে, এখন সেখানে পার্টি অফিস করবে না। এটা একটা পার্সোনাল জেলাসি থেকে করছে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘এতোদিন জেলার কোনো নেতাকে বা এমপি ওই কার্যালয় সম্পর্কে বলা হলো না। ব্যক্তিগতভাবে এমপি এনামুল সেখানে যান, পরিদর্শন করেন। এখন সরকারি জায়গা বরাদ্দ পাওয়ার পর তিনি (এনামুল) কেনো এখন ওই জমির কথা বলছেন।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল