২৫ জুলাই, ২০২৩ ০৮:৩৭

শিশুর সমস্যা ঘাড়ে, অপারেশন হলো তলপেটে!

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

শিশুর সমস্যা ঘাড়ে, অপারেশন হলো তলপেটে!

বরিশালে ঘাড়ে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক শিশুর তলপেটে অপারেশন হয়েছে। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শিশুটির অভিভাবকরা। যদিও এটা কোন ভুল নয়, বড় অপারেশনের আগে বুঝে শুনেই একটা ছোট অপারেশন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মনিরুজ্জামান। 

নগরীর নথুল্লাবাদ লুৎফর রহমান সড়কের বাসিন্দা ও দিনমজুর শাহজালালের ছেলে রায়হান (৬) ছোট বেলা থেকেই ঘাড়বাঁকা রোগে আক্রান্ত। স্থানীয় একটি মাদ্রাসা পড়ুয়া রায়হানের বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। 

গত ১৬ জুলাই রায়হানকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করেন তার অভিভাবকরা। চিকিৎসকরা তার বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২২ জুলাই শিশু সার্জারি বিভাগের অধীনে রায়হানের অপারেশনের দিন ধার্য্য করেন। অপারেশনের পর রায়হানের ঘাড়ে কোন ক্ষতের চিহ্ন না দেখে তলপেটের নিচে সেলাইয়ের দাগ দেখে বিস্মিত হন। রায়হানের মা-বাবা চিকিৎসকদের কাছে কারণ জানতে গেলে তাদের জানানো হয়, শিশুটির হার্নিয়া অপারেশন হয়েছে। সোমবার সকালে শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।

রায়হানের মা সুমি আক্তার বলেন, ঘাড়ে সমস্যার কারণে রায়হানকে প্রথমে শেবাচিম হাসপাতালের বর্হিঃবিভাগে ডাক্তার দেখান। ডাক্তারের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ৫ ধরনের পরীক্ষার পর ডা. তৌহিদুল ইসলাম তাদের জানান শিশুটির ঘাড়ের একপাশে মাংস বেড়েছে। এ জন্য তার অপারেশন প্রয়োজন। ২২ জুলাই অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার দেড় ঘণ্টা পর রায়হানকে বের করা হয়। তখন ঘাড়ে অপারেশনের চিহ্ন না দেখে তলপেটে অপারেশনের আলামাত দেখে এ বিষয়ে ডাক্তারের কাছে জানতে চান। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাদের জানায়, শিশুটির হার্নিয়া অপারেশন হয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় গতকাল তরিঘরি করে তাকে ছাড়পত্র দেয় কর্তৃপক্ষ। 

তার দাবি, ছেলের যে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম তার কোন চিকিৎসা পাইনি। অপ্রয়োজনীয় অপারেশনের কারনে ছেলেটা আরও ভুগছে। 

রায়হানের বাবা শাহজালাল বলেন, প্রয়োজন ছাড়া তারা ছেলের তলপেটে অপারেশন করছে। এতে আমার ছেলের সর্বনাশ হয়েছে। ছেলের ভুল চিকিৎসার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেন তিনি। 

এ বিষয়ে শেবাচিম হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। রোগী ও ডাক্তারের মধ্যে কাউন্সিলিং গ্যাপ ছিল। ঘাড় বাকা রোগ নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশুটির হার্নিয়া রোগও ধরা পড়েছিলো। ঘাড় বাঁকা রোগটি জটিল। দুটি অপারেশন একসঙ্গে করা যায় না। এজন্য চিকিৎসকরা আগে হার্নিয়া অপারেশন করেছেন। পরে ঘাড় বাঁকা রোগের অপারেশন করা হবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি। 

ডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর