বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক একেএম মোর্তুজা আবেদীনের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্না ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। এ সময় মোর্তুজাকে তার লাইসেন্সকৃত রিভলবারসহ পুলিশে সোপর্দ করার অভিযোগ করা হয়।
যদিও পূর্ব বিরোধের জের ধরে বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মোর্তুজা গুলি করার চেষ্টা করলে স্থানীয় জনগণ তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন শ্রমিক লীগ নেতা মান্না। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তারা। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর পোর্ট রোড সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শিকার জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর একেএম মোর্তুজা আবেদীন অভিযোগ করেন, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সকালে তিনি সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে যান। কাজ শেষে বের হওয়ার সময় বাইরে তার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিদ্বন্দ্বী মান্নাসহ অন্যদের দেখে মুঠোফোনে ভিডিও অন করে বাইরে বের হন। বের হওয়া মাত্র মান্না, তার ভাই নাদিম এবং চাচাতো ভাই মিঠুসহ অন্যরা তাকে আকস্মিক মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা তাকে জাঁপটে ধরে তার কোমরে থাকা রিভলবার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি শক্ত করে রিভলবার রক্ষা করার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলের অদূরে এক ট্রাফিক পুলিশ রিভলভারটি রক্ষা করে। এ অবস্থায় তারা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তিনি।অপরদিকে মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্না অভিযোগ করেন, গত সিটি নির্বাচনে তিনি ২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হলে মোতুর্জা আবেদীনের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। আজ সকালে ব্যক্তিগত প্রয়োজন শেষে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় মোর্তুজা আবেদীনের সঙ্গে তার বাদানুবাদ এবং হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে মোর্তুজা তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে গুলি করার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে। ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত দুই ট্রাফিক পুলিশ ওই পিস্তুলটি উদ্ধার করে। এ সময় থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোর্তুজাকে হেফাজতে নেয়। ওই ওয়ার্ডে কেউ কাউন্সিলর প্রার্থী হলে মোর্তুজার রোষানলে পড়তে হয় বলে অভিযোগ মান্নার।
এ বিষয়ে বরিশালে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. হামিদুল আলম বলেন, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সামনে মোতুর্জা ও মান্নার সঙ্গে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। এ সময় মোর্তুজা তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে। বাইরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে মোর্তুজাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুনের সিটি নির্বাচনে ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন মোর্তুজা ও মান্না। মনোনয়ন ফরমে তথ্যে ভুল থাকায় মান্নার মনোনয়ন বাতিল হয়। তবে মান্নার ড্যামি প্রার্থী তার বড় ভাই মুন্না হাওলাদার ওই ওয়ার্ডের ৫ বারের কাউন্সিলর মোতুর্জা আবেদীনকে হারিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল