পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেছেন, যারা প্রতারণা করে গাড়ি-বাড়ি করছেন, বিদেশে অর্থ-পাচার করছেন তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হবে। একই সঙ্গে তাদের সব সম্পদ এবং ব্যাংকে রাখা অর্থ ফ্রিজ করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সিআইডি প্রধান বলেন, যারা প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে টাকা পাচার করছে আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেবো না। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কিছু ঘটনায় এরকম অর্থ ফ্রিজ করেছি। আরও কিছুর কাজ চলছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি যারা প্রতারক তারা প্রতারণার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর সেই টাকা আর রাখেন না। এমনটা অনেকেই করছেন। সম্প্রতি লাগেজ ভর্তি ডলার পাঠানোর কথা বলে প্রায় ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও সেই টাকা নিজের কাছে রাখেনি চক্রের মূল হোতা। চক্রটি মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত। সেজন্য ভার্চুয়াল টোপ থেকে সাবধান হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
লাগেজভর্তি ডলার পাঠানোর নামে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি আরও বলেন,
সুমন আল রেজা (৪০), থাকেন বাংলাদেশে। তার সঙ্গে একটি প্রতারক চক্রের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে প্রতারক চক্রের একজন সদস্য নিজেকে ফ্লোরিডায় একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, একজন ক্লাইন্টের ৬০ লাখ ডলার ডিপোজিট রয়েছে। সেই অর্থ ডলারে আনতে তাকে খরচ দিতে হবে। যার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি টাকা।
রেজা প্রলোভনে পড়ে তার বোন ও দুলাভাইয়ের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা নেন। এরপর সেই টাকা পাঠান প্রতারক চক্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এরপর সেই টাকা তুলে নেয় চক্রটি। এভাবে বিভিন্নজনকে ডলার পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়েছে চক্রটি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। চক্রটির মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির সাইবার ইউনিট। গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তরা হলেন- সোহেল আহমেদ অপু (২৮), ইব্রাহিম (৩০) ও আকাশ (২৪)।
তাদের মধ্যে মূলহোতা তপুকে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। বাকি দুজনকে গত মাসে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তপুকে গ্রেফতার করা হয়। তপু মিরপুরের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া জানান, সুমন আল রেজার সঙ্গে প্রতারক চক্রের ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে প্রতারক চক্রের এক সদস্য নিজেকে ফ্লোরিডা সেই ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন ফ্লোরিডায় ব্যাংকের একজন ক্লাইন্টের ৬০ লাখ ডলার ডিপোজিট রয়েছে। ক্লায়েন্ট হাইতিতে থাকেন। সেই ব্যক্তি ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর মারা গেছেন। কিন্তু তার কোনো ওয়ারিশ নেই। এরপর প্রতারক সুমন আল রেজাকে ক্লায়েন্টের ওয়ারিশ হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন। তার ডিপোজিট করা টাকা উত্তোলনের পর দুজনে সমানভাগে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাবও দেন তাকে। এরপর প্রতারক চক্রটি সুমন আল রেজার কাছে লাগেজ ভর্তি ডলার কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানোর চার্জ বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত