জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেছেন, ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে অগণিত মানুষ আজ দিশাহারা। বিশ্ব আজ এক ভয়াবহ সংকট অতিক্রম করছে। হিংসা, বিদ্বেষ, অসহযোগিতা, অসহনশীলতা, অন্যায্যতা, অমানবিকতায়পূর্ণ আমাদের বিশ্বব্যবস্থা।
শুক্রবার রাজধানীর শেরাটন হোটেলে কূটনৈতিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি রমজানে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিবীদ ও কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার করে আসছে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অসুস্থ অবস্থায় হুইল চেয়ারে করে শেষবার যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও অপুষ্টিতে অগণিত মানুষ আজ দিশেহারা। সমাজে বৈষম্য আজ প্রকট আকার ধারণ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে এ সকল সংকটের সমাধান প্রয়োজন।
জিএম কাদের বলেন, মানুষ হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ দিন দিন বেড়েই চলেছে। সশস্ত্র সহিংসতা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত জেনেভা ঘোষণা অনুযায়ী, সশস্ত্র সংঘাত এবং সহিংসতার কারণে প্রতি বছর ৫ লাখ ২৬ ০০০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এ দ্বন্দ্ব সংঘাতে শুধু মানুষই মারা যাচ্ছে না, লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ বছরের পর বছর নিজ ঘর বাড়ি ছেড়ে দেশান্তরিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী- নিপীড়ন, সংঘাত, সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন বা জনশৃঙ্খলাকে গুরুতরভাবে বিঘ্নিত করার ঘটনাগুলির ফলে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ১০৮.৪ মিলিয়ন মানুষ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, প্রায় ৮২৮ মিলিয়ন মানুষ যা বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ প্রতি রাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৬ মিলিয়ন বেশি৷
তিনি বলেন, গাজা ভূখণ্ডে একটি মর্মস্পর্শী দুঃখজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। দীর্ঘ বিরোধের জেরে রক্ত ক্ষয়ী সহিংসতায় অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ, নারী, শিশু হতাহতের শিকার হচ্ছে। তাদের অবর্ণনীয় দুঃখ দুর্দশা ও অসহায় অনিশ্চিত জীবন যাপনের হৃদয় বিদারক ঘটনার ছবি ও বর্ণনা প্রতিদিন প্রকাশিত হচ্ছে। মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক জাতিগত সহিংসতার ফলে আগস্ট ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে আনুমানিক ৭ লাখ ৪২ হাজারের বেশি লোক, যাদের অর্ধেক শিশু আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। তাদের জীবন অসম্মান জনক ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। বিরোধ ও সে কারণে সহিংসতা। ফলে মানুষের জীবনে দুর্ভোগ কত কঠিন, কত নির্মম হতে পারে উপরের ঘটনাসমূহ তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
জাতীয় পার্টি (জেপি) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর অব. আব্দুল মান্নান, আমেরিকান দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ কানাডিয়ান রাষ্ট্রদূত, রুশ দূতাবাস, তুর্কিয়েসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধি ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
বিডিপ্রতিদিন/সোহাগ/কবিরুল