ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে লাশ খালাসের ক্ষেত্রে ‘পুলিশ কেস’ দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেডিকেল টিম।
শুক্রবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক মাহিন সরকার ও মেডিকেল টিমের সদস্য নাহিদা বুশরাসহ উপস্থিত নেতারা এই অভিযোগ করেন।
তারা জানান, মেডিকেলের নতুন ভবনের মর্গের ক্লিনার খোকন মরদেহ খালাসের ক্ষেত্রে মৃত্যু সনদের উপর ‘পুলিশ কেস’ দেখিয়ে মৃতের আত্মীয়দের কাছে লাশপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে দাবি করেন। টাকা না দিলে থানা থেকে অনুমোদন নিয়ে আসার কথা বলে হয়রানি করা হয় বলেও জানান তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক মাহিন সরকার জানান, এখন কোনও পুলিশের কার্যক্রম নেই। তবুও কেন পুলিশের নামে স্বাক্ষর করা হলো? তারা এভাবে মরদেহ আটকে রেখে ব্যবসা করছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দেয়াল থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পান শাহজালাল নামে মিরপুরের এক বাসিন্দা। শুক্রবার ঢামেকের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে তার লাশ নিতে গেলে খোকন ১০ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন মৃতের এক আত্মীয়। পরে এক ডাক্তারের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে খোকন ৮ হাজার টাকায় রাজি হন বলেও জানান তিনি।
৫ আগস্ট যশোরে আন্দোলনের সময় একটি ভবনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ভবনে আটকা পড়ে দগ্ধ হন সাকিব (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী। শুক্রবার ঢামেকের বার্ন ইউনিটে তিনি মারা যান।
সাকিবের বাবা আলাউদ্দিন জানান, তার কাছ থেকেও লাশ খালাসের জন্য ১০ হাজার টাকা চেয়েছেন খোকন। তবে তিনি দিতে রাজি হননি।
এই দুটি মরদেহের মৃত্যুসনদে ‘পুলিশ কেইস’ উল্লেখ করে একটি সিল মারা হয়েছে। কোনও কারণ ছাড়াই মৃত্যুসনদে এমন সিল মারা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আত্মীয়রা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক মাহিন সরকার জানান, এখন কোনও পুলিশের কার্যক্রম নেই। তবুও কেন পুলিশের নামে স্বাক্ষর করা হলো? তারা এভাবে মরদেহ আটকে রেখে ব্যবসা করছে।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামানকে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা। তার নির্দেশে ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী পরিচালক আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকেই এমন কথা শুনছি। তবে কখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযুক্তরা লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।
শনিবার পরিচালক এসে তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতালের বিভাগীয় নিয়ম এবং দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের একটি অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তবে এই অনুসন্ধানের অগ্রগতি বা তৎপরতা নিয়ে তিনি কিছুই জানাতে পারেননি।
এদিকে শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীকে ঘটনাটি অবহিত করেছেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে খোকন ও মর্গের সর্দারকে আটক করেন এবং আনসারের হেফাজতে দেন।
বিডি প্রতিদিন/একেএ