৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৩:৪০

১০ম গ্রেডে বেতনের সুপারিশ বাস্তবায়ন চান সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ম গ্রেডে বেতনের সুপারিশ বাস্তবায়ন চান সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা

সরকারের বিভিন্ন দফতরে কর্মরত সার্ভেয়ার ও সমমানের পদে কর্মরত সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারগণ দীর্ঘ দিন ধরে চরম বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। একই সমমানের প্রকৌশলীরা ১০ম গ্রেডে কর্মরত থাকলেও ১৪, ১৫ ও ১৬তম গ্রেডে চাকরি করছেন তারা। বৈষম্য নিরসনে উচ্চ আদালত ও বাংলাদেশ কর্ম-কমিশন (পিএসসি) নির্দেশনা দিলেও বিগত সরকার তা বাস্তবায়িত করেনি। এ নিয়ে সার্ভে ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত বৈষম্য নিরসন না হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চার বছর মেয়াদি (পূর্বে তিন বছর মেয়াদি প্রকৌশল ডিপ্লোমা) সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর, অধিদফতর ও সংস্থায় সার্ভেয়ার পদে কর্মরত আছেন। তারা সরকারের সব উন্নয়নমূলক কাজের প্রাথমিক ধাপে সরাসরি ভূমিকা পালন করেন। কারিগরি অধিদপ্তরের আওতায় যতগুলো ডিপ্লোমা টেকনোলজি আছে, তারা সকলেই ১৯৯৪ সালের সম/বিধি-১৬৪নং রাষ্ট্রপতির আদেশে দ্বিতীয় শ্রেণি বর্তমানে ১০ম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়। সেখানে অর্থ বিভাগের সুস্পষ্ট সম্মতি রয়েছে এবং সকল দফতরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অথচ সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা ১৪তম, ১৫তম ও ১৬তম গ্রেডে চাকরি করছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫ সালে ১৭৮ (১৭) স্মারকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্যান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের ন্যায় উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও বেতন স্কেল দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নত করতে অনুরোধ করেন। এ ছাড়া ২০১৩ ও ২০১৪ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের, ভূমি মন্ত্রণালয়ের, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কল্যাণ শাখা থেকে পুনরায় তাদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার সুপারিশ করে অর্থ সচিবকে চিঠি দেয়। এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও সার্ভেয়ার এবং সমমান পদের বেতন স্কেল দ্বিতীয় শ্রেণি (১০ম গ্রেড) বাস্তবায়নে সুপারিশ করে। সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ভূমি মন্ত্রী ওই সকল সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দেন। আদালতের পক্ষ থেকেও সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো কোনো সুপারিশই বাস্তবায়ন হয়নি।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের কানুনগো ও উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার পদে দীর্ঘদিন  যাবৎ কোন পদোন্নতি বা নিয়োগ না থাকায় এক হাজার ৪০০টি পদের মধ্যে এক হাজার ২৫০টি পদ শূন্য থাকায় মাঠ প্রশাসনে সেবাপ্রদান ব্যহত হচ্ছে। এ সকল শূন্য পদ পূরণে  সুপারিশ চেয়ে পিএসসিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়। 

মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে পিএসসি দ্রুত মন্ত্রণালয়কে পদোন্নতির  সুপারিশ করেছে। পিএসসির ১০১৩ জনের মধ্যে জৈষ্ঠতার ক্রমানুসারে পদোন্নতি দিতে বলে হলে ও মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার খামখেয়ালিপনায় পদোন্নতিতে একটা গাছাড়া লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কোন পদোন্নতিতে জটিলতা তৈরি হয় না। একজন সার্ভেয়ার তার কর্মকাল ১০ হলে কানুনগো পদোন্নতি পাওয়ার বিষয় নিয়োগবিধিতে উল্লেখ থাকলেও দীর্ঘ ২৫-২৬ বছর চাকরি করে একটাও পদোন্নতি নেই। এতে তাদের আর্থিক ও মানুষ কষ্ট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেবাগ্রহীতাদের সাথে কথা বললে তারা জানা ভূমির আইনের সংস্কার ও ভূমি ক্যাডার হলে জনগণের ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব সম্ভব। 

বিডি প্রতিদিন/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর