দৃষ্টি-প্রতিবন্ধী একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার হলে তার কথা শুনে উত্তরপত্রে লিখেন একজন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। একইভাবে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর শ্রুতি লেখক এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রির শ্রুতিলেখক হিসেবে এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষার্থী নিয়োগ দেওয়া যায়। সরকারি এই নীতিমালাকে বৈষম্যমূলক বলছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা।
তারা এই নীতি সংশোধনের জোর সুপারিশ জানিয়ে বলেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শ্রুতিলেখক নিয়োগ নীতিমালার কারণে তারা তাদের মেধার যথাযথ স্বীকৃতি পাচ্ছেন না। উপরের শ্রেণির পরীক্ষার বিষয় বা সিলেবাস সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিচের শ্রেণির শ্রুতিলেখকরা পরীক্ষার্থীর কথা শুনেও উত্তরপত্রে ঠিকঠাক উত্তর লিখতে পারে না।
আজ শনিবার রাজধানীর রূপনগরে ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন ডেভেলপম্যান্ট অর্গানাইজেশন (বার্ডো)’র আয়োজিত প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে করণীয় শীর্ষক কর্মশালা এসব বিষয় উঠে আসে।
আয়োজক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক সাইদুল হকের সঞ্চলানায় এতে বক্তব্য রাখেন সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আলাউদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের অতিরিক্ত পরিচালক মুখলেসুর রহমান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক জেসমীন আক্তার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আসফিয়া সিরাত, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক লাভলী খানম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের গবেষণা কর্মকর্তা কাজী তহুরা, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গবেষণা কর্মকর্তা আজিম কবির, সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহযোগী অধ্যাপক এমএ মান্নান, ব্র্যাক’র রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর নীলমণি সরকার, সীপ-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর তারিখ মোহাম্মদ গাদ্দাফি, বাটা বাংলাদেশ’র ব্যবস্থাপক রাজিয়া সুলতানা, প্রতিবন্ধী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষক এরশাদ, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বাধন, টুটুল প্রমুখ।
সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বার্ডোর উপ-ব্যবস্থাপক ফিরোজা খাতুন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম।
কর্মশালায় উপস্থাপিত উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো- প্রাথমিক মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ সকল প্রতিবন্ধী শিক্ষকদেও প্রবেশগম্যতা ও প্রয়োজনীয় স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য উপযোগী পরিবেশ ও ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, সাধারণ শিক্ষকদের ন্যায় প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ, প্রথম শ্রেণি থেকে পরবর্তী সকল শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে সচেতনতার বার্তা হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও খেলার উপকরণ সহজলভ্য করা।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত