১৫ অক্টোবর, ২০২১ ২২:২৮

চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে নাভিশ্বাস

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে নাভিশ্বাস

চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে নাভিশ্বাস ওঠছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে সীমিত আয়, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং নিম্নবিত্তের মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা। প্রতিদিনই বাড়ছে প্রতিটি পণ্যের দাম। বাধ্য হয়েই অগ্নিমূল্যে পণ্য কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।      

ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতিদিনই ভোগ্য পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কোথাও কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই অতিজরুরি নিত্য পণ্যের দাম বাড়ে। অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থাপনায় কারও কোনো নজরদারি নেই। ফলে পণ্যের উর্ধ্বমূখি মূল্যের আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ।       

খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই পাইকারি বাজার ঘুরে জানা যায়, গত এক মাস ধরেই পাইকারি বাজারে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম উর্ধ্বমূখি। গত বৃহস্পতিবার প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের পাইকারি মূল্য ছিল ১৪৭ টাকা এবং খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। তাছাড়া পাইকারিতে প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি হয় ১৩৫ টাকা। অন্যদিকে, পিয়াজের বৃহত্তম বিক্রয় কেন্দ্র খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ বাজারে গত বৃহস্পতিবার পাইকারি প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হয় ৫০-৫৩ টাকা এবং মিয়ানমারের ভাল মানের পিয়াজ বিক্রি হয় ৩৮, ৪০ ও ৪২ টাকা। প্রতিকেজি চায়না রসুন বিক্রি হয় ৯৭-৯৮ টাকা এবং দেশি রসুন ৩০ থেকে ৪৫ টাকা। প্রতি কেজি চায়নার আদা বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, বার্মার আদা ৪০ টাকা, ভারতীয় ও দেশী আদা ৫০ টাকা করে বিক্রি হয়। তাছাড়া, গত দুই সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছিল ৯৬-৯৮ টাকা, গতকাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হয়েছিল ৬৬ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। প্রতিকেজি মসুর ডাল বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।     

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়ত ব্যবাসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলাইমান বাদশা বলেন, ‘আজ প্রতি লিটার সয়াবিন তেল পাইকারিতে বিক্রি হয় ১৪৭ টাকা। যা খুচরায় ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে পাম গাছের সংকট দেখা দেওয়ায় সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়ছে। পাম গাছের সংকট কমলে দামও হয়তো কমতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিশেষ নজর দেয়া জরুরি।’

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ‘গত দুই দিনে পিয়াজের দাম দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত কমছে।  গত বৃহস্পতিবার পাইকারিতে প্রতি কেজি ৫০-৫৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে পিয়াজের দাম আরও কমলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ এরই মধ্যে ভারত থেকে বেশি মূল্যে পিয়াজ আমদানি করে ফেলেছেন।’   

চট্টগ্রাম নগরের বক্সির হাট, সিরাজুদ্দৌলা রোড, রেয়াজুদ্দিন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, প্রতিকেজি টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, প্রতিকেজি শিম ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, তিত করলা ৬০ থেকে ৮০  টাকা, মুলা, চিচিঙ্গা, বরবটি, ঢেঁডশ, পটল, করলা ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বিভিন্ন শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা।     

সাব এরিয়ার সবজি বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, সামনে শীত মৌসুম। তাই মৌসুমের আগে কিছু সবজির দাম বাড়ছে। তবে এখন শুস্ক মৌসুম হওয়াতে বিয়ে মেজবানসহ সামাজিক অনুষ্ঠান বাড়ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টেও পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। তাই গত কয়েকদিন ধরে কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে। এরই মধ্যে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহও কমছে। তাই দাম বাড়ছে। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সবজিসহ কিছু পণ্যের দাম কমে যাবে।  


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর