৯ নভেম্বর, ২০২১ ১৬:৩৪

নতুন ওয়ার্ডে উন্নয়নের ছোঁয়া

৪ হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে বদলে যাবে এলাকা

জয়শ্রী ভাদুড়ী

নতুন ওয়ার্ডে উন্নয়নের ছোঁয়া

নতুন ওয়ার্ডে থাকছে চার লেনের রাস্তা, খাল সংরক্ষণের ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন। উত্তরা কামারপাড়া থেকে তোলা ছবি : রোহেত রাজীব

পাঁচ বছর আগে ইউনিয়ন ভেঙে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) সংযুক্ত হয়েছে ১৮টি ওয়ার্ড। দীর্ঘ সময় পার হলেও মেলেনি সিটি করপোরেশনের সেবা। তাই ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে এসব ওয়ার্ড ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে ডিএনসিসি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হবে এই প্রকল্প।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড উন্নয়নে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এভাবে সব ওয়ার্ডে একযোগে কাজ করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, এসব ওয়ার্ডে চার লেনের রাস্তা থাকবে, খাল সংরক্ষণের জন্য ওয়াকওয়ে থাকবে, সাইকেল লেন থাকবে। ড্রেন-নর্দমা, সড়কবাতি সবকিছুর ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা এবং অন্যান্য সেবা সংস্থাগুলোর ১০০ বছরের মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে সমন্বয় করে এই প্রকল্পের নকশা করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে নতুন ওয়ার্ডে বসবাসকারী নাগরিকদের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটবে।’

২০১৬ সালের জুনে ঢাকার নাগরিক সেবা বাড়াতে হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, বেরাইদ, ডুমনি, সাতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে এলাকাগুলোকে ডিএনসিসির অধীনে নেয় সরকার। তখন এই ইউনিয়নগুলোকে ১৮টি ওয়ার্ডে ভাগ করে সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশনের এলাকা ৮২ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৭.২২ বর্গকিলোমিটার। ডিএনসিসির এলাকা বৃদ্ধি পায় প্রায় আড়াই গুণ। সিটি করপোরেশনে যোগ হয়ে পাঁচ বছর পার হলেও এসব এলাকার বাসিন্দারা পাননি কোনো নাগরিক সেবা। তাদের জীবন মান উন্নয়নে নেওয়া হয়েছে নতুন এই প্রকল্প।
ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুলাইয়ে ওই প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় সরকারের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। ৪ হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে বদলে যাবে ডিএনসিসিতে যুক্ত হওয়া নতুন ওয়ার্ডগুলো। এই প্রকল্পের আওতায় নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে মোট ১৮০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। এর মধ্যে প্রধান সড়কগুলো চার লেন (৩৩ কিলোমিটার) করা হবে। দুই লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ক্যাবলসহ অন্যান্য তার মাটির নিচ দিয়ে নিয়ে যেতে ‘ইউটিলিটি ডাক্ট’ নির্মাণ করা হবে ৯৭ কিলোমিটার। নর্দমা নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে ২৩৩ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার। ১৮টি ওয়ার্ডে খাল রয়েছে ১৩টি। দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮ দশমিক ৫১ কিলোমিটার। এই খালগুলোর উভয় পাশে হাঁটাচলার পথ ও সাইকেল লেন নির্মাণ করা হবে ৫৮ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার। এ ছাড়া এসব ওয়ার্ডে ১২ হাজার ২৬৭টি এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে। এই প্রকল্পে সমস্ত সেবা সংস্থার তার মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এতে থাকবে না তারের জঞ্জাল।

রাজধানীর উত্তরায় কামারপাড়া কবরস্থান রোডের কাজ সম্পন্ন করেছে ডিএনসিসি। এই রোডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত ১৪ অক্টোবর ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে কামারপাড়া কবরস্থান সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পূর্বে এই সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল, মানুষের চলাফেরায় খুব কষ্ট পোহাতে হতো। এখন স্থানীয় জনগণসহ সবাই এই রাস্তাটির সুফল ভোগ করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কামারপাড়া বাজার থেকে সরকারবাড়ি পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট রাস্তাটির নির্মাণ কাজও আগামী মাসেই শুরু হবে। আগামী ২০ নভেম্বর থেকে ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে একটি করে রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হবে। জনগুরুত্ব বিবেচনায় ডিএনসিসির নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একটি করে রাস্তা বাছাই করা হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর