১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:২৪

আগের মতো আমেজ নেই বাণিজ্য মেলায়, কমেছে বিক্রি

এখনও আশাবাদী বিক্রেতারা

নাহিদুর রহমান হিমেল

আগের মতো আমেজ নেই বাণিজ্য মেলায়, কমেছে বিক্রি

মেলার প্রবেশ পথ। সংগৃহীত ছবি।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর বসেছে এবার পূর্বাচলে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মাসব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে পহেলা জানুয়ারি। শুরুর দিকে দর্শনার্থী কম থাকলেও এখন বাড়ছে। তবে বিগত বছরগুলোতে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে চলা মেলার মতো আমেজ নেই এখানে। আবার বিক্রিও অনেকটা কম। বিক্রেতারা বলছেন, দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন বেশির ভাগ ক্রেতা। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, দাম বেশি।

সরজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে চলা এই মেলায় যেতে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কুড়িল থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে বাস ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। সড়ক উন্নয়নের কাজ চলায় দিনে যানজট না থাকলেও রাতে কোথাও কোথায় জট থাকছে। মেলার প্রবেশ পথের পাশেই রয়েছে টিকিট কাউন্টার। বড়দের টিকিট মূল্য ৪০ টাকা, বাচ্চাদের জন্য ২০ টাকা (৪-১২ বছর)। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই মেলায় দর্শনার্থীদের চাপ বাড়ে বিকেল থেকে। 

মোহাম্মদপুর থেকে আসা এক দর্শনার্থী জানান, এবার মেলা প্রাঙ্গণ অনেক দূরে হওয়ায় যানজটের কথা চিন্তা করে পরিবার নিয়ে তিনি দুপুরে মেলায় এসেছেন এবং বিকালের মধ্যেই মেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করবেন। 

মেলায় বিদেশি প্যাভেলিয়ন, ছোট স্টলগুলোর পাশাপাশি রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। এখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আলোকচিত্রসহ মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। দর্শনার্থীরা প্যাভেলিয়নটি ঘুরে দেখছেন, ছবি তুলছেন। 

এদিকে বাণিজ্য মেলায় আগের মতো আমেজ নেই বলে মন্তব্য করেছেন অনেক দর্শনার্থী। রাজধানীর ভাটারা সোলমাইদ এলাকা থেকে আসা সাদিয়া আক্তার বৃষ্টি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শেরেবাংলা নগরে মেলায় স্টলগুলো ছিল বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। সেখানে অনেক প্যাভেলিয়ন ছিল বড় বড়, কিছু থাকতো দোতলা। বড় বড় প্যাভেলিয়ন ঘুরে শেষ করতে অনেক সময় লাগত। এবারের মেলা খুবই ছোট পরিসরে হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। জায়গা অনেক থাকলেও ছোট ছোট স্টল বসানো হয়েছে। জিনিসপত্রের দামও তুলনামূলক একটু বেশি। খাবারের মানতো একাবারেই নেই, দাম অনেক বেশি।

মেলা শুরুর পর থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ঢাকা থেকে দূরে হওয়ায় এবারের মেলার সিংহভাগ দর্শনার্থী আশপাশের এলাকার। সকালের চেয়ে বিকেল থেকে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর চাপ। ছুটির দিনে ভিড় কিছুটা বাড়ে। এবারের মেলায় কেনাকাটার চেয়ে ঘুরে দেখা, ছবি তোলায় আগ্রহ বেশি দর্শনার্থীদের। তবে আগের মতো বিক্রি নেই বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, ক্রেতারা এসে দেখে দাম জিজ্ঞেস করে চলে যাচ্ছেন। 

মেলার বিভিন্ন দোকানমালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নতুন স্থান, ধুলাবালুময় রাস্তা আর করোনা পরিস্থিতির কারণে আগের চেয়ে এবারের মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম। তবুও তারা আশা করছেন শেষ সময়ে হলেও বাড়বে বিক্রি।

দর্শনার্থীদের খাবারের ব্যবস্থা করতে মেলার ভেতরে পর্যটন করপোরেশনের ক্যানটিন ছাড়াও আছে বেশ কিছু খাবারের স্টল। তবে স্টলগুলোতে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অভিযোগ রয়েছে দাম বেশিরও। 

অন্যদিকে করোনার সংক্রমণ রোধে ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মাস্ক পরে মেলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। তবে মেলায় প্রবেশের পর অনেকেই আর স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক খুলেই তারা ঘুরছেন স্টলগুলো। আবার অনেক বিক্রেতার মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। 

উল্লেখ্য, এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল রয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এক ঘণ্টা সময় বাড়িয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে জানা গেছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর