বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোন পথে

কাজ শেষ হচ্ছে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে

মানিক মুনতাসির

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোন পথে

বিদ্যুৎ গতিতে ছুটবে গাড়ি বিমনবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী কুতুবখালী। প্রায় ২০ কিলোমিটার এ পথে কোথাও থাকবে না কোনো যানজট। পড়বে না কোনো ট্রাফিক সিগন্যাল। এক নিমিষে শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে যাবে গাড়ি। এটাই হবে নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুফল। যা যুক্ত করবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, আগামী ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। এবং সেপ্টেম্বর-২০২১ থেকেই গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সেই লক্ষ্যেই এ প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে দ্রুত গতিতে। প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, শুকনো মৌসুম হওয়ায় দিনরাত ২৪ ঘণ্টা বিরামহীন কাজ করছেন শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা। এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায় বিমানবন্দর থেকে বনানী অংশের কাজ ইতিমধ্যে ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপ বনানী রেল স্টেশন থেকে মগবাজার রেল ক্রসিং পর্যন্ত আগামী বছরের জুলাই মাসে এবং তৃতীয় বা শেষ ধাপ মগবাজার রেল ক্রসিং থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত অংশের কাজ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সেতু সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা বনানী রেলক্রসিং এবং বনানী রেলক্রসিং থেকে মগবাজার রেল ক্রসিং পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হলে সেই অংশ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তৃতীয় ধাপের কাজও চলমান থাকবে।  সূত্র জানায়, এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটির এখন পর্যন্ত প্রথম ধাপের কাজের অগ্রগতি শতকরা ৫০ ভাগ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে শতকরা ২০ ভাগ। প্রকল্পে মোট এক হাজার ৩০৪টি পাইল রয়েছে। এর মধ্যে ২৮০টি পাইল ক্যাপ, ৬২টি ক্রস-বিম নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের ১৬৩টি কলামের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮৪টি কলামের আংশিক সম্পন্ন হয়েছে এবং ১৮৬টি আই গার্ডার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া দুটি স্প্যান আই গার্ডার স্থাপনের কাজও ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে মিলিত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজধানীর যানজট অনেকাংশে কমে আসবে। আর বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। এমনকি সেখানে থাকবে না কোনো ট্রাফিক সিগন্যালও। ফলে রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামগামী গাড়িগুলোকে ঢাকার ভিতরের রাস্তায় আটকে থাকতে হবে না ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

 যে সময়টা ঢাকার রাস্তায় তীব্র যানজটে বসে থাকতে হয় সে সময়ের মধ্যেই হয়তো চট্টগ্রামেই পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। শুধু তাই নয়, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি এশিয়ান হাইওয়ে করিডোরে উন্নত পর্যায়ের সেবা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এটি আঞ্চলিক সংযোগকে করবে আরও উন্নত এবং গতিশীল। এতে ভ্রমণ খরচও হ্রাস পাবে। কেননা জ্বালানি খরচ কমে আসবে। সবচেয়ে বেশি লাভ হবে সময়ের ক্ষেত্রে। কেননা অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ভ্রমণ করা যাবে ২০ কিলোমিটার পথ। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে তরান্বিত করবে। জিডিপিতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সৃষ্টি হবে নতুন দিগন্ত।

সর্বশেষ খবর