টানা ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম ও সিলেট নগরীর সিংহভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নিজস্ব প্রতিবেদকদের পাঠানো খবর-
চট্টগ্রাম : রাতভর টানা ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম নগরীর সিংহভাগ আবারও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দুর্ভোগে নাকাল হয়ে পড়েছেন নগরবাসী।
গত ৮ জুলাই ভারি বর্ষণে নগরীর দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। এরপর থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু এলাকা প্লাবিত হতে থাকে। তার ওপর শুক্রবার রাতভর একটানা এবং গতকাল দিনের কিছু সময় মুষলধারে বৃষ্টিপাত হলে আবারও জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে নগরবাসী। এর ফলে নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে। এছাড়া অনেক এলাকার সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ প্রায় বন্ধই ছিল। পানি ঢুকে পড়েছে বাসা, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস, কাঁচাবাজারেও। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। দুপুরের পর বৃষ্টির অনুপাত কিছুটা কমে এলে মূলত দিনের কাজ শুরু হয় এসব অফিসে। বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় মূল সড়কগুলো ছিল যানজট কবলে। আবার শাখা সড়কগুলোও ছিল জলের কবলে। ফলে নগরীতে অচলাবস্থা শুরু হলে কিছু কিছু এলাকায় পানি সরানোর কাজে নামেন সেনাসদস্যরা। তারপরও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নগরীর বাসিন্দারা। এদিকে নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ বিশ্বজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে গতকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রামে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত আরও অন্তত দুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। সিলেট : সিলেট নগরীর সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত শাহজালাল উপশহর। আবাসিক এই উপশহর এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম গোয়ালীছড়া। এতোদিন এই খাল উপশহরবাসীর আশির্বাদ হয়ে প্রবাহমান থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিশাপ হিসেবে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে উপশহর এলাকার অন্তত তিনটি ব্লকের পাঁচ শতাধিক বাসার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পাহাড়ধস : টানা বর্ষণে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। ঝুকিঁপূর্ণ অবস্থানে থাকা বসবাসকারীদের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। খোলা হয়েছে ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রও। দেয়া হচ্ছে ত্রাণ ও খাবার সামগ্রী। সর্বশেষ ১৫টি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে। গতকাল টানা বর্ষণের ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরীর আরেফিন নগর ও কুসুমবাগ আবাসিক এলাকার পাহাড়ধসে পড়ে। পাহাপড়ধসে আটকে পড়া ঘরের ভিতর থেকে মা-মেয়ে দুজনেই আটকে পড়ে। এ ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর একটি টীম ও ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে। গতকাল ভোর থেকে টানা বর্ষণে নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ের মাটি চরম হয়ে যাওয়ায় বায়েজিদ থানার আরেফিন নগর এবং কুসুমবাগ আবাসিক এলাকায় পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার রাজিব হোসেন।