রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

সন্ত্রাস দমনে ছয় ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ

-------- সিটিটিসি প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, সন্ত্রাস দমনে পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশকে রোল মডেল মনে করে। সন্ত্রাসবাদ দমনে ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এবার বাংলাদেশের অগ্রগতি সবচেয়ে বেশি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন এবং ঝুঁকিমুক্তির দিক থেকে ছয় ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সে এখন বাংলাদেশের অবস্থান ৩১ নম্বরে। স্কোর ৫.২৮০। অর্থাৎ এ দেশে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব বর্তমানে মাঝারি মাত্রার।  রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গতকাল ‘উগ্রবাদ রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ তথ্য তুলে ধরেন। সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (রিসার্ফ) আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শবনম আজিম। আলোচনায় অংশ নেন একাত্তর টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু, জিটিভির সিইও সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, দেশ টিভির সুকান্ত গুপ্ত অলোক, ডিবিসির মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।

মনিরুল ইসলাম জানান, গত বছর নভেম্বরে সিডনিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের (আইইপি) বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক-২০১৯ প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছয় ধাপ উন্নতি হয়ে ৩১তম। স্কোর ৫.২০৮। অর্থাৎ এ দেশে সন্ত্রাসবাদের প্রভাব মাঝারি মাত্রার। ২০১৮ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৫তম। এর আগের বছর বাংলাদেশ ছিল ২১তম। তিনি জানান, সন্ত্রাসী হামলার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে আফগানিস্তান। এ ছাড়া দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে আছে যথাক্রমে ইরাক, নাইজেরিয়া ও সিরিয়া। পঞ্চম অবস্থানে আছে পাকিস্তান। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকে ভারতের অবস্থান এখন সপ্তম।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে দেখেছি ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণরাই উগ্রবাদে বেশি জড়িয়েছে। এ কারণে আমরা সারা দেশে পাড়া-মহল্লায় সব জায়গায় পোস্টার ও বিলবোর্ড লাগিয়েছি। পরিবার, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। উগ্রবাদে জড়ানোর বিষয়টি প্রথম তাদের কাছেই ধরা পড়ে।’ তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় বক্তাদের নিয়েও আমরা কাজ করছি। তবে ধর্মীয় বক্তারা ওয়াজ মাহফিলে নারী ও অন্যান্য ধর্মকে নিয়ে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দেন। সেটি যেন করতে না পারেন সেজন্য আমরা কাজ করছি।’ মনিরুল বলেন, ‘আমরা কাজ করতে গিয়ে দেখেছি উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস দমনে গণমাধ্যমের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। একটা ঘটনা ঘটার পর মিডিয়া প্রচার করার পর জনগণ ও সরকারকে প্রভাবিত করে, যার ফলে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও নিরাময় সম্ভব।’ তিনি বলেন, জঙ্গিদের মৃত্যুর ঘটনা যাতে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অনেক সময় টেররিস্টরাও মিডিয়া কাভারেজ চায়। যদি তাদের মতো করে কাভারেজ না হয় তাহলে টেররিস্টরা মিডিয়া ও মিডিয়াকর্মীদের ওপর আঘাত করে। তাই টিভির লাইভ টেলিকাস্টের সময় সচেতন থাকা দরকার। কারণ একটা ঘটনার সময় যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে থাকেন এবং সেটি যদি লাইভ টেলিকাস্টের মাধ্যমে জঙ্গিরা জানতে পারে, তাহলে তারা বেছে বেছে তার ওপর হামলা করবে।

সর্বশেষ খবর