সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

তৃণমূলে শৃঙ্খলা ফেরাতে চ্যালেঞ্জে আওয়ামী লীগ

ইউপি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা বন্ধে মাঠে শীর্ষস্থানীয় নেতারা, দলের ‘চেইন অব কমান্ড’ হুমকির মুখে দাবি নেতা-কর্মীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হচ্ছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নে পরাজিত নৌকা প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয়েছে। অনেক স্থানে দলীয় কার্যালয়ের দখল নিয়েই প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন বহিষ্কৃতরা। এ অবস্থায় তৃণমূলে শৃঙ্খলা ফেরাতে মাঠে নেমেছেন জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতারা। একই সঙ্গে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা বন্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এদিকে দ্রুত পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ না করলে ‘চেইন অব কমান্ড’ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীরা। জানা যায়, দ্বিতীয় দফায় ভোটে চেয়ারম্যান পদে দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় খুলনার ২৫টি ইউনিয়নের ১৫টি হাতছাড়া হয় আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে বহিষ্কৃত বিদ্রোহীরা জিতেছেন ১০টিতে। নির্বাচনের পর ডুমুরিয়ার শরাফপুর, ভান্ডারপাড়া ও বটিয়াঘাটার ভান্ডারকোটসহ বিভিন্ন স্থানে বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা পরাজিত নৌকা প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া ইউনিয়নে নৌকার পরাজিত প্রার্থী হিমাংশু বিশ্বাস বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত দখল নিয়েছেন। ঘোনাবান্দা, তেঁতুলিয়া, উলা ও হাজিবুনিয়ায় নৌকার কর্মীদের মারধর করে আহত করা হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’ জানা যায়, নৌকার বিপক্ষের প্রার্থী ও তার সঙ্গে প্রচারণায় থাকায় ডুমুরিয়ায় ১১২ জন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এর পরও তৃণমূলে শৃঙ্খলা ধরে রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, ‘মনোনয়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা চান তাদের ব্যক্তিগত লোকজন। আর আমরা চাই সংগঠনের লোক- দলের সমর্থিত প্রার্থী। বিভিন্ন স্থানে সংসদ সদস্যরা তাদের মতো করে প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন। এতে তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে।’ এদিকে গতকাল ডুমুরিয়ার ভান্ডারপাড়া ও শরাফপুর ইউনিয়নে আহত নৌকার কর্মীদের দেখতে যান জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। এ সময় ভুক্তভোগীরা নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার কারণে হামলা ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পেছনে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন। এদিকে এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে দলকে বড় খেসারত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন বটিয়াঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল আলম খান। তিনি বলেন, দলের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে। তাদের কারা ইন্ধন দিচ্ছে খুঁজে বের করতে হবে। দলে গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন তারা নেতা-কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন, মারধর করছেন, যা দুঃখজনক। দ্রুত এসব ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর