শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

সিসিক বর্ধিতকরণে ৫৬ আপত্তি

বেশির ভাগ আপত্তি নতুন ১২ ওয়ার্ডের সীমানা নিয়ে

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) আয়তন বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। বর্ধিতকরণের পর ২৬.৫ বর্গকিলোমিটারের সিটি করপোরেশনের আয়তন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ বর্গকিলোমিটারে। ইতোমধ্যে নতুন ১২টি ওয়ার্ড গঠনের মাধ্যমে বর্ধিত এলাকা চিহ্নিত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ওয়ার্ড গঠনের পর দেখা দিয়েছে বিপত্তি। ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগে পড়েছে একের পর এক আপত্তি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ড নিয়ে ৫৬টি আপত্তি পড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে। সিসিক সূত্র জানায়, আয়তনের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে ছোট সিটি করপোরেশন ছিল সিলেট। ২৬.৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে ২৭টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করে চলছিল করপোরেশনের কার্যক্রম। ২০১৪ সালের ২২ জুলাই সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিটি করপোরেশনের আয়তন বৃদ্ধির আবেদন করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। ওই বছরের আগস্টে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সরুজ কুমারনাথ সীমানা পরিবর্তন, সম্প্রসারণ এবং সংকোচন বিধি অনুযায়ী তথ্য উল্লেখ করে পুনঃপ্রস্তাব প্রেরণ করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেন সিসিককে। জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির চাকরি শেষে ২০১৫ সালে দেশে ফেরার পর বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সিটি করপোরেশনের সীমানা বর্ধিতকরণের উদ্যোগ নেন। তিনি সিসিকের আয়তন ১৮০ বর্গকিলোমিটার করার দাবি জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালি শুরু করেন। ২০১৫ সালের ২৩ জুন সিসিকের আয়তন ছয় গুণ বৃদ্ধির একটি প্রস্তাবনাও দেওয়া হয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে। তবে চা বাগান, জলাশয়, হাওর সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে রাখতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বর্ধিত সিসিকের আয়তন দাঁড়ায় ৬০ বর্গকিলোমিটারে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩১ আগস্ট সিলেট সদর উপজেলার চারটি ও দক্ষিণ সুরমার তিনটি উপজেলার বেশ কিছু মৌজাকে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে একীভূত করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগ। সর্বশেষ ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন আওতাভুক্ত এলাকাগুলোকে ১২টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। নতুন এই ১২টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৯টি। সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানকে। ওয়ার্ড নিয়ে আপিলের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ৮ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে কারও কোনো আপত্তি থাকলে জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করার আহ্বান জানানো হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৫৬টি আবেদন পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, আবেদনগুলোর বেশির ভাগই সীমানা নিয়ে। কেউ ওয়ার্ড বিস্তৃত করতে, আবার কেউ পাশর্বর্তী ওয়ার্ডে সংযুক্ত হতে আবেদন করেছেন। আবেদনগুলোতে নিজেদের যুক্তিও তুলে ধরেছেন আবেদনকারীরা।

এ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ জানান, গত ৮ মার্চ ছিল সিটি করপোরেশনের নতুন ওয়ার্ড গঠন সংক্রান্ত আপিলের শেষ দিন। ওই সময়ের মধ্যে ৫৬টি আবেদন পড়েছে। এখনো সব আবেদন পড়ে দেখা হয়নি। যেসব আবেদনের যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাবে সেসব আবেদন আমলে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকপন্থায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর