বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

এখনো জমে ওঠেনি ঢাকার পশুর হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখনো জমে ওঠেনি ঢাকার পশুর হাট

আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল ছিল কোরবানির হাটে পশু কেনাবেচার প্রথম দিন। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকার ও খামারিরা ইতোমধ্যে হাটে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন। তবে কোরবানিদাতা কিংবা ক্রেতাদের উপস্থিতি তেমন একটা নেই। কিছু মানুষ এলেও দরদাম করে চলে যাচ্ছেন। এ কারণে এখনো কোরবানির হাট জমে ওঠেনি। গতকাল রাজধানীর গাবতলী হাটে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ক্রেতাদের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। পাইকার ও খামারিরাও কেউ কেউ বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কেউবা ব্যস্ত ছিলেন গবাদিপশুর যত্ন নিয়ে। জামালপুরের মাদারগঞ্জের পাইকার আবুল কালাম। তিনি ১৭টি গরু নিয়ে গতকাল গাবতলীর হাটে এসেছেন। এখনো একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তার আনা একেকটি গরুর ওজন ৩ থেকে ৭ মণ।

আবুল কালাম বলেন, ক্রেতা খুবই কম। যে কজন আসছেন, তারাও শুধু দাম জানতে চাইছেন। দাম শুনে কিছু না বলেই চলে যাচ্ছেন। কোনো কোনো ক্রেতা শুধু বাজার ঘুরে দেখছেন বলেও তিনি জানান। আবুল কালাম তার আনা ৩ মণ ওজনের একেকটি গরুর দাম ১ লাখ ৮০ হাজার আর ৭ মণ ওজনের একেকটি গরু ৩ লাখ টাকা দাম চাইছেন।

হাসিল আদায়ের দায়িত্বে থাকা সোলায়মান খান বলেন, হাটে এখনো ক্রেতা আসতে শুরু করেনি। যে কজন আসছেন, তারা দরদাম যাচাই করছেন। খুব বেশি গরু বিক্রি হয়নি।

মিরপুর-২ নম্বর এলাকার বাসিন্দা রাফসান কবির তার ভাই আহসান কবিরকে নিয়ে হাট ঘুরে ঘুরে গরু পছন্দ করছিলেন। রাফসান বলেন, ‘দুই ভাই মিলে ঘুরে দেখছি কেমন গরু এসেছে। দামটাও যাচাই করছি। কাল (বৃহস্পতিবার) রাতে অথবা শুক্রবার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে হাটে এসে গরু কিনব।’ একই অবস্থা দেখা গেছে, শাহজাহানপুর কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাটে। এই হাটে বিভিন্ন জাতের গরু, ছাগাল ও মহিষ উঠেছে। কুষ্টিয়ার মেহেরপুর থেকে ছয়টি গরু নিয়ে এ হাটে এসেছেন আমিন ব্যাপারী। তিনি জানান, তার গরুগুলো বড় ও আকর্ষণীয়। তাই অনেকেই এসে দেখছেন, ছবি তুলছেন। কিন্তু এখনো ক্রেতার দেখা পাননি। তার কাছে ৩ লাখ থেকে শুরু করে ৭ লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে।

মুগদা থেকে শাহজাহানপুর কোরবানি পশুর হাটে এসেছেন শরিফ আহমেদ। তিনি জানান, হাটে অনেক গরু উঠেছে। কিন্তু বিক্রেতারা অনেক দাম হাঁকছেন। দামদর না মেলায় আরও গরু দেখে পরে কিনবেন। হাটের ইজারাদার আবদুল লতিফ বলেন, এখনো হাটে বেচাকেনা পুরোদমে শুরু হয়নি। ঢাকার মানুষ এত আগে গরু কেনেন না। হাটে সব ধরনের গরু উঠেছে। শুক্র ও শনিবার বেচাকেনার ধুম পড়ে যাবে।

কমলাপুর লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব কোরবানি পশুর অস্থায়ী হাটে গিয়েও প্রায় একই রকম দৃশ্য দেখা গেছে। এ হাটে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৩০টি গরু নিয়ে এসেছেন আরিফুর রহমান। আলাপকালে তিনি জানান, গত চার-পাঁচ দিনে মাত্র চারটি গরু     বিক্রি হয়েছে। গরুগুলো দেখভাল করার নয়জন মানুষের খাওয়াসহ অন্যান্য খরচের জন্য অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার হাসেম ব্যাপারী জানান, সাতটি গরুর মধ্যে একটি বিক্রি হয়েছে। তার ১৪ মণ ওজনের একটি ষাঁড় গরুর দাম ৫ লাখ টাকা চাইছেন। আর ৯ মণ ওজনের ষাঁড়ের জন্য চাইছেন ৩ লাখ টাকা।

হাটটির ইজারাদার গোলাম কিবরিয়া খান বলেন, বেচাকেনা জমতে শুরু করেছে। বাকি এই তিন দিন পুরোদমে বেচাকেনা হবে। ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তাসহ হাটের সার্বিক ব্যবস্থাপনার সব    প্রস্তুতি রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর