মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

চিকিৎসা পাচ্ছেন না লাখো ক্যান্সার রোগী

♦ জনবল এবং অবকাঠামোর সংকট ♦ দূষণ, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ধূমপান ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। মানুষের মাঝে ক্যান্সার সচেতনতায় জোর দিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে প্রতিবছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত প্রতি ১০ হাজার মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে একটি ক্যান্সার সেন্টার। জনবল এবং অবকাঠামোর সংকটে ক্যান্সার আক্রান্ত ১ লাখ মানুষ সেবা পাচ্ছেন না। গতকাল ক্যান্সার চিকিৎসায় সক্ষমতা ও বাংলাদেশ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

রাজধানীর গুলশান-১-এর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ক্যান্সার স্টাডি গ্রুপ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিসার্চ ফেলো জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার এপিডেমিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জহিরুল ইসলাম নাদিম, বিশেষ অতিথি ছিলেন হিস্টোপ্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফরিদা আরজুমান, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী।

ডা. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় সংকট এখনো কাটেনি। মহামারী কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে দেশে এ পর্যন্ত ২৯ হাজার মানুষ মারা গেছেন। অথচ ক্যান্সারে মারা গেছেন সাড়ে ৪ লাখের বেশি। ক্যান্সার শনাক্তের হার বাড়ায় রোগীও বেড়েছে। শহরে শনাক্ত বেশি হলেও মৃত্যু কম। কিন্তু গ্রামে শনাক্ত কম হলেও মৃত্যু হার বেশি। গ্রামের রোগী জানে না আক্রান্ত হলে কোথায় যেতে হবে। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় জনবল এবং অবকাঠামোর সংকট রয়েছে। দেশে রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট রয়েছেন মাত্র ২০৩ জন, মেডিকেল অনকোলজিস্ট রয়েছেন ৩০ জন। জনবল এবং অবকাঠামোর সংকটে প্রায় ১ লাখ ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ক্যান্সার আক্রান্তের হার বেশি। বাংলাদেশে ক্যান্সার আক্রান্তের হার ১০৬ দশমিক ২, ভারতে এ হার ৯৭ দশমিক ১, নেপালে ৮০ দশমিক ৯, পাকিস্তানে ১১০ দশমিক ৪, মিয়ানমারে ১৩৬ দশমিক ৮। এ দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হচ্ছে। প্রতি বছর ৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। ক্যান্সার রোগীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে জোর দেন তিনি।

ডা. জহিরুল ইসলাম নাদিম বলেন, দূষণ, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ধূমপান ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। মানুষের মাঝে ক্যান্সার সচেতনতায় জোর দিতে হবে। সচেতনতার অভাবে রোগ শনাক্ত হতে দেরি হচ্ছে। অনেক রোগীর এ দুরারোগ্য রোগের খরচ চালানোর সামর্থ্য থাকে না। তাই স্বাস্থ্যবীমা চালু করা প্রয়োজন। ডা. ফরিদা আরজুমান বলেন, অনেকে রোগ হলে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে লুকিয়ে রাখে। এতে বিপত্তি আরও বাড়ে। দ্রুত শনাক্ত হলে রোগীর সুস্থ হওয়ার হার ঊর্ধŸমুখী হয়। দেশের ক্যান্সার চিকিৎসাকে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। এ সংক্রান্ত গবেষণায় নিয়মিত আর্থিক সহযোগিতার দিকে নজর দিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর