মাছ উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা হিসেবে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৯০ কোটি টাকার চিংড়ি এবং সাদা মাছ বিদেশে রপ্তানি হয়। যার পরিমাণ ৩৯ হাজার ৬৪৮ মেট্রিক টন। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চিংড়ি ও সাদা মাছ রপ্তানি হয় ৫ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। যার পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ২২১ মেট্রিক টন। অর্থাৎ সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে মাছ রপ্তানি কমেছে প্রায় ১ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকার। অপরদিকে খুলনায় ইলিশ আহরণের পাশাপাশি বাগদা, গলদা, তেলাপিয়া, কাঁকড়া ও কুঁচিয়ার চাষ হচ্ছে। যা মৎস্য খাতে সম্ভাবনা তৈরি করছে।
খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিপটন সরদার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনাঞ্চল থেকে মূলত ইউরোপের বাজারে গলদা-বাগদা চিংড়ি রপ্তানি হয়। কিন্তু উচ্চমূল্যের চিংড়ি গলদা-বাগদার চাহিদা কমে যাওয়া, কমমূল্যে ভেনামি চিংড়ির দাপট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি চিংড়ি রপ্তানিতে প্রভাব ফেলেছে। এ ছাড়া ১৭ জুলাই থেকে দেশজুড়ে সহিংসতায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন থাকায় চিংড়ির অনেক শিপমেন্ট সময়মতো না হওয়ায় ধাক্কা খেয়েছে রপ্তানিকারকরা।
তবে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মতবিনিময় সভায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়বেদ পাল জানান, খুলনায় ইলিশ আহরণের পাশাপাশি বাগদা, গলদা, তেলাপিয়া, কাঁকড়া ও কুঁচিয়ার চাষ হচ্ছে। যা মৎস্য খাতে সম্ভাবনা তৈরি করছে। তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শুধু এ জেলা থেকেই ২ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার মাছ ও মাছজাত দ্রব্য বিদেশে রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ১৬ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে। যার বাজারমূল্য ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। সাদা মাছ রপ্তানি হয় ২৫ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য ৪০০ কোটি টাকার বেশি।
তিনি জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও খুলনায় ২৬ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে মাছের উৎপাদন ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। মাথাপিছু দৈনিক মাছ গ্রহণের চাহিদা মাথাপিছু ৫০ গ্রাম। মোট মাছের চাহিদা ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। সে ক্ষেত্রে খুলনায় মাছ উদ্বৃত্ত থাকছে ৬৮ মেট্রিক টনের বেশি।
মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, মাছের অধিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে মান যেন বজায় থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। সেই সঙ্গে মাছ চাষ করতে গিয়ে অন্য চাষাবাদেরও যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।