সাম্প্রতিক সহিংসতায় দুর্বৃত্ত ও নাশকতাকারীদের হামলা, অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। গতকাল তারা বিটিভির স্টুডিও, অডিটরিয়ামসহ ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলী বলেন, গত ১৮ তারিখে যে ধ্বংসযজ্ঞ বিটিভির ওপর চালানো হয়েছে, স্বাধীনতার পর এমন চিত্র আমরা কখনো দেখিনি। দেশের প্রথম এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তারা মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বাস করে না, স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, এটা তো জনগণের সম্পদ, আমরা কেন এটাকে ধ্বংস করব। আমরা আন্দোলন করতে পারি, কিন্তু ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারি না। আমাদের বিশ্বাস- সাধারণ শিক্ষার্থীরা এটা কখনো করেনি। যারা দুষ্কৃতকারী, যারা মৌলবাদ তারাই এ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
কাজী কেরামত আলী আরও বলেন, সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা দেখব বিটিভির কতটা ক্ষতি হয়েছে। এটাকে ঠিক করতে কত টাকা লাগবে তা জানিয়ে আমরা সরকারের কাছে বলব। যাতে এটাকে পুনরায় আবার আগের মতো করা যায়।
কমিটির সদস্য ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বিটিভি রাষ্ট্রীয় সম্পদ, জনগণের সম্পদ। এটা কোনো দলের সম্পদ নয়। আজকে আমরা বিটিভিতে যা দেখেছি তা প্রত্যক্ষভাবে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। স্টুডিও, ক্যামেরাসহ প্রতিটি স্থাপনা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে পুড়ে দিয়েছে। শুধু বিটিভি নয়, অনেক গণমাধ্যমের গাড়ি ও কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, কোনো শিক্ষার্থী গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাতে পারে না। এটা দুষ্কৃতকারীদের কাজ। এই দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
তিনি বলেন, বিটিভিকে টার্গেট করা হয়েছিল এখান থেকে সম্প্রচার মাধ্যমে হামলা চালিয়ে সরকার পতনের ডাক দেওয়া হবে। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীরা করতে পারে না। এটা যারা করেছে তারা স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নকে বিশ্বাস করে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। তারপরও তাদের আর কীসের আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী সরকার উৎখাতের পাঁয়তারা করছে। আরেক সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ট্রেনিংপ্রাপ্ত মানুষ এবং বিটিভিকে জানাশোনা ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ভিতরে ঢুকে যে কাজগুলো করা হয়েছে তা কখনোই করা সম্ভব নয়। মাটির নিচ দিয়ে যে সম্প্রচার ক্যাবল গেছে এটা সাধারণ কোনো মানুষের জানার কথা নয়। যারা ট্রেনিংপ্রাপ্ত তারা জানে বিটিভিকে ধ্বংস করলে বাংলাদেশ অনেক অংশে দুর্বল হবে। এর মানে তারা বাংলাদেশকে স্বীকার করে না। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। মো. আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে ড. ইউনূস সাহেবরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছেন। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান- আপনারা জাতির ভবিষ্যৎ। আপনারা আবার বই হাতে নেন, পড়াশোনায় ফিরে যান।