জাহালম কান্ডে আলোচিত হওয়া সাতটি মামলায় চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে ২০১৯ সালে সংস্থাটির ৩৩ মামলায় আসামি হিসেবে ভুলভাবে নাম আসায় জাহালম ব্যাপক আলোচনায় আসেন।
দুদক বলছে, এই ৩৩টি মামলার মধ্যে ২৬ মামলায় চার্জশিট দিয়েছিল তারা। পরে হাই কোর্ট সেই জাহালমকে অব্যাহতি দিয়েছেন। বাকি থাকা সাত মামলায় চার্জশিট তারা দেয়নি। প্রকৃত আসামিদের যুক্ত করে রবিবার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এই সাতটি মামলার চার্জশিটের অভিযুক্তরা হলেন- ঠাকুরগাঁয়ের আবু ছালেক, সোনালী ব্যাংকের প্রাক্তন সাপোর্টিং সাব স্টাফ মাইনুল হক, প্রাক্তন প্রিন্সিপাল অফিসার মাহতাব উদ্দিন আহম্মেদ ও নুরুদ্দিন শেখ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার লুৎফর রহমান, প্রাক্তন অফিসার ছাদেক আলী, মানিকগঞ্জের আমিনুল ইসলাম, সাগর আহমেদ ওরফে সফদার হোসেন ওরফে নজরুল ইসলাম, মোজাফফর হোসেন, মোহাম্মদ হায়দার আলী ও মিরপুরের সহিদুল ইসলাম। সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে ২০১৪ সালে আবু সালেক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। এর পর সালেককে তলব করে দুদক চিঠি দিলে সেই চিঠি পৌঁছায় জাহালমের টাঙ্গাইলের বাড়ির ঠিকানায়। নরসিংদীর ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলের শ্রমিক জাহালম তখন দুদকে গিয়ে বলেন, তিনি আবু সালেক নন, সোনালী ব্যাংকে তার কোনো অ্যাকাউন্টও নেই। ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আবু সালেকের যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে সেটিও তার নয়। কিন্তু দুদকে উপস্থিত বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা সেদিন জাহালমকেই ‘আবু সালেক’ হিসেবে শনাক্ত করেন। পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ঘোড়াশাল থেকে জাহালমকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে আদালতেও জাহালম দুদকের পরিচয় বিভ্রাটের বিষয়টি তুলে ধরে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। কিন্তু কেউ তার কথা কানে তোলেননি। কারও কাছে সমাধান না পেয়ে জাহালমের বড় ভাই শাহানূর মিয়া গত বছর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যান। তার আবেদনে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে জাহালমের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। পরে মানবাধিকার কমিশনের তদন্তে বেরিয়ে আসে, আবু সালেক আর জাহালম একই ব্যক্তি নন।