ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখেননি স্থানীয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। রাজশাহীতে হিমাগার খালি করা আলু খুচরায় ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩৯ টাকা কেজি দরে কিনেছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পুরাতন আলু ৬০-৬৫ এবং নতুন আলু ৭০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের কারণে রাজশাহীতে আলুর দাম কমতে শুরু করেছে। অভিযান অব্যাহত থাকলে আলুর দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহীতে ৪৩টি হিমাগার আছে। এসব হিমাগারে প্রায় ৮৫ লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণ করা যায়। প্রতি বস্তায় আলু থাকে গড়ে ৬০-৬৫ কেজি। এখনো অনেক হিমাগারে আলু মজুদ আছে। এসব হিমাগারের মধ্যে ১৫ ও ১৭ ডিসেম্বর রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠ পবা উপজেলার দুটি হিমাগার থেকে ২ হাজার ৬০৬ বস্তা আলু বের করে ৩৯ টাকা কেজি দরে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ওই আলু খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সে আলু রাজশাহী খুচরা বাজারে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার রাজশাহীর সাহেববাজার খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পুরাতন আলু ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন আলু ৭০-৭৫ টাকা। কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, ‘সরকার পাইকারি বাজারে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আলু মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছিলেন। তাঁরা বাজারে বেশি দামে আলু বিক্রি করছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগী চক্রের যোগসাজশে আলুর দাম বাড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
হিমাগার থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রাজশাহী শহরের খুচরা বাজারে ৪৫ টাকার পরিবর্তে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা কেজি।’
তিনি জানান, ১৫ ও ১৭ ডিসেম্বর হিমাগারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মোট ২ হাজার ৬০৬ বস্তা আলু ৩৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়েছে। আলুর বাজারে কয়েক দফা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চলমান অস্থিরতা ঠেকাতে সম্প্রতি পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। মজুদ আলু ৩০ নভেম্বরের পর হিমাগারে রাখা যাবে না, এমন আদেশও দিয়েছে সরকার। কিন্তু পবার কয়েকটি হিমাগার নির্ধারিত সময়ের পরও বিপুল পরিমাণ আলু মজুদ করে রেখেছিল।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন জানান, ২ হাজার ৬০৬ বস্তা আলু জব্দ করেছিলেন। খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ী এসে আলু ৩৯ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যান। যাদের কাছে আলু বিক্রি করেছেন তাদের ফোন নম্বর রেখে দিয়েছেন। এ আলু ভোক্তাদের কাছে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হবে। তারা যেখানে আলু বিক্রি করবেন, সেখানে তারা তদারকি করবেন।